মধ্যে আচ্ছন্ন করে রাখলে মনে বেশ শান্তি আসে। নানা কারণে আমার মন দমে গিয়েছিল। অপমানের বোঝা আর সইতে পারছিলাম না। সে জন্যই আমোদ-প্রমোদের সন্ধানে বের হয়েছিলাম। আফগানিস্থানে সিনেমা নেই যা দেখে মনে একটু শান্তি আনতে পারা যায়, অপেরা নেই যেখানে গিয়ে মনের বিষাদ লাঘব করতে পারা যায়। শীতের সময় নৃত্য অথবা হৈহল্লাও নেই যে তা দেখে সময় কাটানো যায়, অথচ আমার কাবুল শহরে আর থাকতে মোটেই ভাল লাগছিল না। মোটরে করে গজনি হয়ে কান্দাহার যাবার বন্দোবস্ত হয়েছিল, কিন্তু পথে প্রচুর বরফ জমে থাকায় গাড়ি চালানো মোটেই সম্ভব ছিল না। তখন বাধ্য হয়েই পুরা একটা মাস আমাকে কাবুল শহরে থাকতে হ'ল।
কাবুলে পুরা এক মাস থাকতে বাধ্য হ'লেও অলসভাবে দিনগুলি কাটিয়ে যাই নি।
কাবুলে একজন পার্শি ব্যবসায়ীর সংগে পরিচয় হয়। তিনি পর্যটকদের বড়ই ভালবাসেন। আমাকে একাকী সাইকেলে পৃথিবী পর্যটনে বহির্গত হতে দেখে তিনি খুব বিস্ময় প্রকাশ করেন এবং আমাকে নানারূপ প্রশ্ন করেন। তাঁর প্রশ্নের সন্তোষজনক জবাব দিতে সক্ষম হওয়ায় তিনি খুশি হলেন বটে, কিন্তু আমি যে মতবাদ পোষণ করি তাতে তিনি দুঃখিত হন। এত সাধের স্বর্গরাজ্য কাবুল—যেখানে যাবার পর যা চাওয়া যায় সবই পাওয়া যায়—সেখানে আমি থাকতে চাই না, এমন কি সুখ বলে এখানে কিছু আছে তার অস্তিত্বও বিশ্বাস করি না, এতে দুঃখ হবার কথাই। কথায় কথায় তিনি প্রশ্ন করলেন, এ শহরে নানারূপ দ্রষ্টব্য জিনিস আছে, তা আমি দেখেছি কি না? জিজ্ঞাসা করে জানলাম এখানে অনেক পুরাতন বই আছে। হালে বোখারা হতে যারা এসেছে তারা সে সকল বই সংগে করে এনেছে।