পাতা:আফগানিস্থান ভ্রমণ.djvu/১২৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
আফগানিস্থান ভ্রমণ
১১৭

পাওয়া যায়। এখানে বসেই অনেক রাষ্ট্রনৈতিক ভারতের ভবিষ্যত নিয়ে নানা রকম প্রবন্ধ রচনা করেন। পূর্বে এখানে বসেই অনেক বৈদেশিক ধনতান্ত্রিক চীনাতুর্কিস্থানের উপর চালাবাজি করতেন। কিন্তু সোভিয়েট রুশ সেই চালবাজিতে বাধা দিয়ে তুংগান সরদার মহম্মদকে খাসগার হতে তাড়িয়ে দিয়েছিলেন। এখন তিনি শ্রীনগরে বাস করছেন। এই কাবুলে বসেই একদিন আনোয়ার পাশার বোখারা আক্রমণের মতলব রচনা করা হয়েছিল। কাবুলও পৃথিবীর চালবাজির একটি কেন্দ্রস্থল। কাবুলের রুশ রাষ্ট্রদূত যখন তার বাড়ী হতে বের হন। তখন লোক অবাক হয়ে তাঁর দিকে তাকায়। আবার যখন একজন খর্বকায় জাপানী লাঠি হাতে করে গম্ভীর মুখে পথে পথে বেড়ান। তখন হুঁশিয়ার লোক তানাকা মেমোরিয়েলের কথা স্মরণ করে কেঁপে ওঠে। ব্রিটিশ রাজদূত উদাসীর মত পৃথিবীর সকলকে উপেক্ষা করেন এবং কি ভাবেন কিন্তু তিনি যখন পথে বের হন। তখন অনেকেই তাঁকে চীন-সম্রাটের সংগে তুলনা করে।

 কে বলে কাবুলে প্রাণ নেই? ঢাক ঢোল বাজিয়ে আমোদ হয়। নীরব নিস্তব্ধতার মাঝেও ডিপ্লমেটিক চালবাজি দেখে আনন্দ পাওয়া যায়। ডিপ্লমেটিক চালবাজি দু রকমের। আভ্যন্তরিক এবং বাহ্যিক। বাহ্যিক চালবাজিই সাধারণ লোক দেখতে পায়, আভ্যন্তরিক চালবাজি বুঝবার জন্য সাধারণ লোক চেষ্টাও করে না। আমি বাইরের চালাবাজি দেখেই আনন্দিত হতাম।

 জীবনের ঈম্পিত দ্রষ্টব্য স্থানগুলির মধ্যে কাবুল শহরও একটি ছিল। কাবুল দেখা হয়ে গেলে একদিন ভাবলাম কাবুলের বৈদেশিক কনসালদের বাড়ী বেড়িয়ে আসলে ক্ষতি কি? এই বাড়ীগুলিও দ্রষ্টব্য স্থলসমূহের মধ্যে গণ্য করা যেতে পারে। কন‍্সালদের বাড়ীতে বেড়াতে গিয়েছিলাম। কারো কাছে হাত পাততে ইচ্ছা হয় নি, সেজন্যই বোধহয় সকল কন‍্সালই সাদর সম্ভাষন করতে ত্র‍‌ুটি করেন নি। একজন কন‍্সাল শুধু উপদেশাচ্ছলে বলেছিলেন “আমি যদি রুশ দেশে যাই তবে খুবই ভাল হবে। আবার সংগে সংগেই বলেছিলেন