বিদেশী সরকারের চক্ষে আর এক শ্রেণীর লোক যারা দেশভক্ত বলে বিশেষভাবে পরিচিত, তারাও যে কালীমাতার শরণাগত হন পুলিশ তা জানত; সেজন্য দেবালয়ে আশ্রয় নিতে কুণ্ঠিত হতাম, তা ছাড়া আমার মত দেবভক্তিহীনের পক্ষে দেবতার মন্দিরে আশ্রয় লওয়াটা অসঙ্গত বলেই মনে করতাম। কালীবাড়ীতে পৌঁছামাত্রই পূজারী ঠাকুর ভিজে-বেড়ালটির মত কাছে এসে জিজ্ঞাসা করলেন, “আপনি কবে আফগানিস্থানে যাবেন?” ভাবখানা যেন তিনি আমাকে বেশ ভাল করেই চেনেন।
লোকটার কথার কোন জবাব দিতেও আমার প্রবৃত্তি হচ্ছিল না। তবুও ভদ্রতার খাতিরে বললাম, রওনা হ’লেই হ’ল আর কি। কাছে উপবিষ্ট একটা মোটা লোক বললে, অনেকেই বলে বটে আফগানিস্থানে যাবে, কিন্তু আসলে কেউ যায় না, যাবার ক্ষমতাও রাখে না।
এদের কোন কথার জবাব না দিয়ে দাশগুপ্তকে নিয়ে বরাবর সিনেমা ঘরের দিকে চলে গেলাম। এ-সব প্রশ্ন বড় দুর্লক্ষণ বলে মনে হ’ল। মনে বড়ই ভয় হচ্ছিল, বোধ হয় আমার অগ্রগতির পথে কোন বাধাবিঘ্ন হতে পারে। চিন্তা করে ঠিক করলাম পরদিন সকালেই স্থানীয় আফগান-কন্সালের সংগে সাক্ষাৎ করব এবং তাঁর কাছ হতেই জানতে পারব আমার পাসপোর্টে কোন ত্রুটি আছে কিনা?
পরদিন সকালেই আফগান-কন্সালের বাড়ী গেলাম। পাসপোর্ট দেখেই কন্সাল অফিসের একজন যুবক-কেরানী বললেন, আপনি আফগানিস্থানের দিকে রওনা হয়ে ভালই করেছেন। কি করে যে দিল্লীর কন্সাল-জেনারেল আপনার পাসপোর্টে ভিসা দিয়ে দিলেন, তা মোটেই বুঝতে পারছি না। যা হোক, এখন আপনি এখানকার সেক্রেটারিয়েটে গিয়ে পাসপোর্টে “আফগানিস্থান” শব্দটি লিখিয়ে নিয়ে আসুন, তবেই সকল হাংগামা হতে রক্ষা পাবেন।