পাতা:আফগানিস্থান ভ্রমণ.djvu/১৩০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
আফগানিস্থান ভ্রমণ
১২১

 কিন্তু ধর্ম কেহই পরিত্যাগ করতে পারে না। আহার-নিদ্রা পরিত্যাগ করে কি কোনও মানুষ বাঁচতে পারে? মিথ্যা গল্পে অর্থাৎ মাইথোলজীিতে অনেক কাহিনী আছে যে অমুক লোক এত হাজার বৎসর না খেয়েও বেঁচে ছিলেন। মাইথোলজীির তুলনা সেই ধরণের গালগল্প পুস্তকেই বর্ণিত হয়েছে কিন্তু এটা সত্যকথা, না খেয়ে মানুষ বাঁচতে পারে না। বুদ্ধ কয়েক দিনের জন্য খাদ্য ছেড়ে দেবার পর যখন বুঝতে পেরেছিলেন উপবাস করলে মস্তিস্ক নিক্রিয় হয়ে যায়। তখন তিনি খাদ্য গ্রহণ করেন। তাঁকে খাদ্য গ্রহণ করতে দেখে তাঁর কয়েকজন শিষ্য তাঁর সংগ পরিত্যাগ করেছিল। এতে তিনি একটুও কাতর হন্ নি।

 এই ধরণের অবতারবাদী বিপ্লবাত্মক আলোচনাতেই আমানউল্লার যৌবনের অনেক বৎসর কেটেছিল। আবদুল্লা, রাজা মহেন্দ্র প্রতাপ, লালা লাজপত রায়, এই ধরণের বিপ্লবীদের সংগে আমানউল্লা ভাবের আদান-প্রদান করতে পেরেছিলেন।

 নূতন চিন্তাধারায় উদ্ভাসিত হয়েই দেখলেন দুইলক্ষ পঞ্চাশ হাজার মাইল রাজ্য বর্বর এবং অশিক্ষিতদের দ্বারা আধুষিত। মোল্লারা পরোক্ষ শাসন এবং শোষণ করছে এবং মোল্লাশ্রেণীর লোক বৃটিশ সাম্রাজ্যবাদীদের কাছ থেকে উৎকোচ পেয়ে যা ইচ্ছা তাই করে যাচ্ছে।

 আমানউল্লার পিতা পুরোপুরি বৃটিশের পক্ষপাতী ছিলেন। কারণ ১৯১৭ খৃঃ অঃ রুশিয়াতে বিপ্লব হবার পর আফগানিস্থানের নিকটস্থ সোভিয়েট ষ্ট্রেটগুলিতে অনেক রকমের আন্দোলন, গোলমাল, মারামারি কাটাকাটি চলতে থাকে। হবিবুল্লা হয়ত ভেবেছিলেন যদি তার রাজ্যেও সেরূপ অঘটন ঘটতে আরম্ভ করে তবে বৃটিশ সরকার এক থাবায় আফগানিস্থান কেড়ে নেবে।

 হবিবুল্লার বৃটিশ প্রীতি সকলের সহ্য হয় নি। কতকগুলি তথাকথিত দেশপ্রেমিক লোক বিশেষ করে হবিবুল্লার আত্মীয়েরা তাঁর প্রাণনাশের চেষ্টায় অগ্রণী হয় এবং নাসেরউল্লাকে শাসকরূপে গ্রহণ করতে মনস্থ করে। নাসেরউল্লা