পাতা:আফগানিস্থান ভ্রমণ.djvu/১৩২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
আফগানিস্থান ভ্রমণ
১২৩

 হবিবুল্লার হত্যার পর আমানউল্লা নিজেই রাজ্যভার গ্রহণ করেন এবং বিপ্লবীদের সাহায্যে বৃটিশ অধিকৃত উত্তর-পশ্চিম-সীমান্ত আক্রমণ করেন। এই আক্রমণের পেছনে অভিসন্ধি ছিল। ভারতীয় বিপ্লবীরা আমানউল্লাকে ভারতের সম্রাট ঘোষণা করেন এবং আফগানিস্থানের বিপ্লবীরা পাঠান অধিকৃত এলাকা উত্তর-পশ্চিম-সীমান্ত প্রদেশ করায়ত্ব করার জন্য বদ্ধপরিকর হন্ কিন্তু এটা জানিবার কথা অবশ্য সকলের কাছে নয়, উত্তর-পশ্চিম-সীমান্ত প্রদেশের লোকের মধ্যে শিক্ষা না থাকায় সেই এলাকার লোক কতকগুলি কমিউনিটিতে বিভক্ত ছিল এবং এক কমিউনিটি অন্য কমিউনিটিকে আক্রমণ করত, অবস্থা ছিল ফিউডেলইজম। ফিউডেলইজমের অন্তর্ভুক্ত যারা তাদের শাসন করা অতি সহজ, কারণ তাদের আত্মরক্ষা করার ক্ষমতাও কম। বৃটিশ প্রচারের ফলে উত্তর-পশ্চিম-সীমান্ত প্রদেশ বিপজ্জনক এলাকাতে পরিগণিত হয়েছিল বটে। কিন্তু যে কোনও অরগেনাইজড্ সৈন্য যে উত্তর-পশ্চিম-সীমান্ত প্রদেশকে করায়ত্ব করার ক্ষমতা রাখত তা বৃটিশ ভাল করেই জানত।

 উত্তর-পশ্চিম-সীমান্ত প্রদেশকে ভয়াবহ করে রাখারও একটি কারণ ছিল। সেই কারণ হ’ল ভারতীয় অর্থে কতকগুলি বৃটিশ পণ্টনকে উত্তর-পশ্চিম-সীমান্ত প্রদেশে প্রতিপালিত হবার সুযোগ দেওয়া হয়েছিল। ভারতীয় বড় বড় হিন্দু রাজারা তাই মনে করতেন এবং অম্লানবদনে বৃটিশ কার্যাবলী সমর্থন করে যেতেন। উত্তর-পশ্চিম-সীমান্ত প্রদেশ এবং বেলুচিস্থানের দুর্বল আর্থিক অবস্থা এবং অধিবাসীর মানসিক দুরাবস্থা বৃটিশ শাসকশ্রেণী জনাত কিন্তু যখনই শুনতে পাওয়া গেল উত্তর-পশ্চিম-সীমান্তবাসীদের মধ্যে বিদ্রোহ আরম্ভ হয়েছে তখন বৃটিশ বিষয়টা মোটেই মেনে নিল না। ভারতের হিন্দুরা চিন্তিত হ’ল এবং বৃটিশ সরকারকে এই বিষয়ে প্রশ্ন করে ব্যতিব্যস্ত করে তুলল। বৃটিশ কয়েক সপ্তাহ কাটিয়ে দিল আফগানদের আক্রমণের প্রক্রিয়া দেখতে। যখন বৃটিশ দেখতে পেল সত্যই আফগান এবং সীমান্তবাসীরা বৃটিশের কয়েকটি ঘাঁট আক্রমণ করছে।