পাতা:আফগানিস্থান ভ্রমণ.djvu/১৩৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
আফগানিস্থান ভ্রমণ
১২৫

করে এবং আফগানিস্থানের হিন্দু জেনারেল নিরঞ্জন সিং এমনই একটি চাল দেন যার সাহায্যে আফগানিস্থান স্বাধীন রাজ্য বলে স্বীকৃত হয় এবং আমানউল্লা আফগানিস্থানের প্রথম রাজা স্বীকৃত হয়ে রাজ্যভার গ্রহণ করেন।

 আমানউল্লার রাজত্বকালে অদম্য উৎসাহ নিয়ে সামাজিক উন্নতি হতে থাকে। হিন্দুরা অনেক দিক দিয়ে সরকারী সাহায্যে নিযুক্ত হয় এবং উপজাতিদের মধ্যে নব-জীবনের সঞ্চার হতে থাকে। চারিদিকে উন্নতির লক্ষণ সর্বত্র লক্ষিত হয়। কিন্তু মোল্লা এবং মৌলবী শ্রেণীর লোক যেন কিছুতেই নাই এটাও লক্ষিত হচ্ছিল।

 সিংহাসন লাভ করার পর আমানউল্লা বিদেশে যান নি। সেজন্য তাঁর বিদেশ দেখা সমূহ দরকার মনে করেন এবং ইউরোপ ভ্রমণে বাহির হন। সংগে যান। তাঁর স্ত্রী সুরিয়া। সুরিয়া পর্দা হতে মুক্ত হয়ে সভ্য সমাজের রাজ-পরিবারগুলির সহিত মেলামেশা করতে থাকেন। ইংলেণ্ডের পত্রিকাগুলি অত্যধিক উৎসাহী হয়ে রাণী সুরিয়ার ছবিসমেত সকল বিষয় ছাপাতে আরম্ভ করে। পৃথিবীর সাধারণ লোক মনে করতেছিল কি আনন্দের সংবাদ! একটি পশ্চাদপদ জাত ক্রমেই এগিয়ে যাচ্ছে। এদিকে রাজা আমানউল্লার অবর্তমানে মোল্লারা প্রচুর স্বর্ণমুদ্রার মালিক হয়ে সাধারণ লোককে ক্রমাগত উস‍্কাণী দিতে থাকে এবং তার ফলে রাজ্যের মধ্যে নানা বিশৃঙ্খলতা দেখা দেয়। রাজা আমানউল্লা মস্কোএর পথে কাবুলে প্রত্যাবর্তন করেন এবং রাজ্যের দারিদ্র্য এবং বিশৃঙ্খলতা দূর করতে মন দেন।

 বাচ্চ-ই-সিক্কা নামে একটি লোক তখন জেলে ছিল। জেলের লোক তাকে বেশ ভাল লোকই মনে করত এবং তার আদেশে অনেক কাজও করত। বাচ্চ-ই-সিক্কা প্রায়ই মশক দিয়ে জল বহন করে মানুষের বাড়ীতে দিয়ে আসতেন। এতেই তাঁর আহারের বন্দোবস্ত হয়ে যেত। তখনকার আফগান জেলআইন মতে কয়েদীকে খাদ্যরূপে কিছুই দেওয়া হ’ত না অথবা এমনই সামান্য