যে দোকানগুলি আটা, চাল ও ডাল বিক্রি করত তারা নেক্ড়ে বাঘের ভয়ে দোকান বন্ধ করেছিল।
রাত্রে সে ঘরে আলোর ব্যবস্থা ছিল না। অন্যান্য যারা ঘরে আশ্রয় নিয়েছিল তারা ঘরের ভেতর হতে খড়কুটো জড় করে আগুন জ্বালাল এবং ছোট একটি অগ্নিকুণ্ডের সৃষ্টি করল; সেই অগ্নির সাহায্যে আমরা একে অন্যের মুখ দেখে গল্প আরম্ভ করলাম। এত আজগুবি গল্প এরা বলছিল যে সেগুলো শুনে আমার ঘরে টিকে থাকাই দায় হয়ে উঠল। একজন বলছিল বাংগালীরা পৃথিবীর মধ্যে এক নম্বরের যাদুকরের জাত। ইচ্ছা করলেই যাকে তাকে ছাগল বানিয়ে রাখতে পারে। বাংগালীরা ছায়ামূর্তি ধারণ করে গ্রাম হতে গ্রামান্তরে যায়, এজন্যই বাংলাদেশে পথঘাটের কোন বালাই নাই। আমি বাংগালী একথা তারা জেনেছিল, সেজন্যই এসব গল্পের অবতারণা হচ্ছিল। তারপর উঠল আমারই কথা। একজন বললে এই মুসাফিরের কোন ভয় সেই। যখনই কোন বিপদ আসে তখনই সে বিপদ হতে রক্ষা পাবার জন্য অদৃশ্য হয়ে যায়। বাংগালী পৃথিবী ভ্রমণ করবে না তো করবে কে? এরূপ নানাবিধ আলোচনার মাঝেই ঘুমিয়ে পড়েছিলাম।
পরদিন প্রাতে উঠেই চা রুটি খেয়ে আবার রওনা হলাম। আজ আমরা অন্ততঃপক্ষে ষাট মাইল না গেলে কোন গ্রাম পাব না—একথা ড্রাইভার মহাশয় গম্ভীরভাবে ঘোষণা করলেন। যে সব মাল আমাদের ব্যবহার করবার জন্য নামান হয়েছিল সেই সকল যথাস্থানে রেখে, খাবারের জন্য কয়েকখানা পরোটা কাগজে মুড়ে রওনা হলাম। পথে জলের বড়ই অভাব ছিল, পার্বত্য দেশের ছোট ছোট নদী নালাগুলির সব জল জমে বরফ হয়ে গিয়েছিল। শুধু পাতকুয়াতেই জল পাওয়া যেত। নিকটস্থ একটি পাতকুয়া হতে জল সংগ্রহ করবার জন্য মোটর থামল। পাতকুয়ার চারদিক বরফে ভর্তি হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু আশ্চর্যের বিষয়, কুয়ায় ভেতর যে বরফ পড়েছিল তা গলে গিয়েছিল। আমরা কেরোসিন টিনে পরিমান