পাতা:আফগানিস্থান ভ্রমণ.djvu/১৪৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

গজনী

 গজনী এবং সোমনাথ পাশাপাশি চলছে। গজনীর নাম শুনা মাত্র যে কোন ভারতবাসী বলবে, “সেই গজনী যেখান থেকে সুলতান মামুদ সতেরবার সোমনাথ আক্রমণ করেছিলেন।” যদি কথাটি হিন্দুধর্মাবলম্বীদের মধ্যে ওঠে তবে অমনি দুঃখের কালিমা সকলের মুখে ফুটে উঠবে। মুসলমান যদি একই বিষয় আলোচনা করে তবে উদ্দীপনার ভাব দেখা দিবে। যেদিন কাবুল হতে কান্দাহার রওন হই সেদিন আমার মনে গজনী সম্বন্ধে কি ধারণা হয়েছিল তাই বলা, অন্যের কথা চিন্তা করে কি লাভ হবে।

 ভাবছিলাম আসামাই মন্দিরের ভেতর দিয়ে যে নালা বয়ে যায় তাতে হিন্দু এবং মুসলমান বসন্ত হতে রক্ষা পাবার জন্য ঘোল ঢালে। এই দেশের লোকই গজনীর সুলতান ছিলেন। তারপর ভাবছিলাম আফগানিস্থানের যে দরিদ্র লোক না খেয়ে মরছে, তারা হিন্দু না মুসলমান? আগে বাঁচতে হবে তারপর ধর্মের প্রশ্ন। কিন্তু পুরোহিত, মোল্লা এবং পাদ্রী সেকথা মানুষকে ভাবতে দেয় না, পরজন্মের চিন্তায় ডুবিয়ে রাখে এবং তাদেরই সামনে ধরে তুলে সুলতান মামুদের মত ধর্মোন্মাদের বীরত্ব কাহিনী। আমার মনে গজনীর সুলতান অথবা সোমনাথ রেখাপাতও করতে পারছিল না। আমি ভাবছিলাম দেখতে হবে কি করে এদেশ হতে দ্রাবীড় সভ্যতা লোপ পেল, দ্রাবীড়গণ কি করে শ্বেতকায়দের সংগে মিশে গেল। যাকে ধর্ম বলে এত হাল্লা করা হয় সেটাত হল সেদিনকার সৃষ্ট কতকগুলি রীতি এবং নীতি। কিন্তু যখন ধর্ম বলতে কিছু ছিল না, যখন ছিল শুধু গোষ্টি তখন কি করে একে অন্যকে ধ্বংস করে জাতের সৃষ্ট করেছিল?

 তারপর বর্তমান যুগ। বাস্তবিকই আফগানিস্থানের পাহাড়িয়া অঞ্চল স্বাস্থ্যপূর্ণ স্থান। এদেশে কেন এখনও আর্থিক উন্নতি হয় নি? অথচ এরা