পাতা:আফগানিস্থান ভ্রমণ.djvu/১৪৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১৪০
আফগানিস্থান ভ্রমণ

তাকে হয়তো ধূলিসাৎ করে দেবে। আমানউল্লা ছিলেন নতুনের অগ্রদূত। তিনি নতুনের ভিত্তি পত্তন করে গেছেন মাত্র। আবার যখন নতুন এলে প্রচণ্ড আঘাত হানবে তখন পুরাতন চুর্ণবিচূর্ণ হয়ে যাবে। আপনারা নতুনের জন্য অপেক্ষা করুন। আমার কথা শুনে পাঠান রুষ্ট হলেন না। আমার হাত ধরে নিকটস্থ মন্দিরে নিয়ে গেলেন।”

 পুরাতন মন্দির—শিবের মন্দির। মন্দিরটি পাথরের আর শিবও পাথরের। মন্দির ও দেবতা আমার প্রাণে যে ভক্তিরসের সঞ্চার করল না, একথা বলাই বাহুল্য। কিন্তু ঐ যে পূজারী ঠাকুরটি মন্দিরের একপাশে বসে গাঁজার কলকেতে দম দিচ্ছেন, তাঁকে দেখে আমার মনে প্রচুর কৌতুক রসের উদ্রেক হল। দীর্ঘকালব্যাপী ইসলামিক প্রাধান্যের পরিচয়স্বরূপ দাঁড়িয়ে আছে সুলতান মামুদের যে জয়স্তম্ভ তারই কাছে এসে গাঁজা ফুঁকাও বীরত্বের পরিচায়ক। গাঁজাখোরের সংগে কথা বলতে ইচ্ছা হল। কিন্তু গেঁজেলকে কথা বলতে খুব আগ্রহান্বিত বলে মনে হল না। যা হোক আমি যখন তাঁকে জিজ্ঞাসা করলাম মন্দির সম্বন্ধে ঐতিহাসিক তথ্য তিনি কিছু জানেন কি না? তখন তিনি পোস্ত ভাষায় জবাব দিলেন “সুলতান মামুদের জয়স্তম্ভের ইতিহাস আছে, কিন্তু এই শিবমন্দিরের ইতিহাস কিছুই নেই। মানুষের সভ্যতার সংগে সংগে এর জন্ম হয়েছিল এবং মানুষের ধ্বংসের সংগে সংগেই এরও ধ্বংস হবে।” গেঁজেলের কথায় হাসি পেল খুব কিন্তু শুনে যাওয়াই আমার কাজ। যা শুনেছি তাই যদি ঠিক মত বলতে পারি তবেই আমার কাজের পরিসমাপ্তি হবে।

 প্রবল বেগে হাওয়া চারিদিকে বয়ে চলছিল। উন্মুক্ত প্রান্তরে দাঁড়িয়ে থাকতে মোটেই ভাল লাগছিল না। শিবমন্দির দেখে ফেরবার কালে পাঠান আমাকে বললেন, আসুন এবার আমাদের গ্রামে যাই। পাঠানের গ্রামে গেলাম। পাঠান আমাকে একজোড়া হাতমোজা উপহার দিলেন এবং তাঁর বাড়িতে নিয়ে গিয়ে বসালেন। তাঁর সংগে কথা হল। পাঠান বললেন “গজনী শহরের কাহিনী