অন্য কারও নয়। এই বলেই তিনি বললেন, দিন তো পাসপোর্ট, এখনই কাজটা সেরে দিচ্ছি। যুবক আমার হাত থেকে পাসপোর্ট নিয়ে তাতে আফগানিস্থান শব্দ লিখে দিলেন। তারপর বললেন, পরদিন সকালে আমি যেন প্রাইভেট সেক্রেটারির সংগে দেখা করি। বুঝলাম তিনি বেশ ভাল লোক, তাঁর দ্বারা আমার কিছু উপকারও হতে পারে।
পরদিন সকালে যুবকের কথামত প্রাইভেট সেক্রেটারির সংগে সাক্ষাৎ করলাম। তিনি আমাকে পর্যটকরূপেই গ্রহণ করলেন, শাসক-শাসিতের সম্পর্ক ভুলে গিয়ে অন্তরংগভাবে আলাপ করলেন। ইংরেজ যুবক আমাকে তাঁদের দেশে যেতে উৎসাহিত করলেন এবং বিশেষভাবে বলে দিলেন, ব্রিটেনে গিয়ে যেন শিলিং হোস্টেল চেন-এর মেম্বর হই, সেই হোস্টেলগুলিতে থেকেই ব্রিটেনের জনগণের সত্যিকার চেহারা দেখতে পাব।
দারিদ্র্য জিনিসটার রূপ পৃথিবীর সর্বত্রই এক হ’লেও দারিদ্র্যের কারণ সর্বত্র এক নয়। ব্রিটেন প্রকৃতির বিরুদ্ধে সর্বদাই লড়াই করে, প্রকৃতিকে আয়ত্তে এনে লক্ষ্মীর ভাণ্ডার লুঠ করবার চেষ্টা করছে। সে-লুঠের মোটা ভাগ পাচ্ছে যারা শক্তিমান, যারা সংখ্যায় মুষ্টিমেয় এবং লুণ্ঠনে যাদের প্রকৃত যোগ সবচেয়ে কম। আর যারা লক্ষ্মীর ভাণ্ডার জয় করে আনে, সেই সংখ্যাগরিষ্ঠদের ভাগেই বখরা পড়ে সবচেয়ে কম। যান্ত্রিক সভ্যতায় যে-সব দেশ বিশেষ পুষ্টিলাভ করেছে, সে-সব দেশে দারিদ্র্য টাকাকড়ি কম বলেই নয়, বণ্টনের দোষে। আর আমাদের দেশের দারিদ্র্য যান্ত্রিক সভ্যতা বা বৈদেশিক শোষণের জন্যে ততটা নয়, যতটা আমাদের স্বভাবের দোষে। আমাদের দার্শনিকগণ দারিদ্র্যকে উচ্চ আসন দিয়েছেন। মোটা ভাত মোটা কাপড়ে সন্তুষ্ট থেকে উচ্চ চিন্তা করার শিক্ষা আমরা পেয়ে এসেছি। তাই আমাদের দেশে প্রকৃতি তাঁর সব সম্পদ উন্মুক্ত করে ধরে রাখা সত্ত্বেও আমাদের দেশের লোক ক্ষুধায় কাতর, দেনায় জর্জরিত, স্বাস্থ্যে বঞ্চিত এবং পরানুগ্রহে লাঞ্ছিত। কষ্ট করে এদেশের লোক কিছু অর্জন কবতে