পাতা:আফগানিস্থান ভ্রমণ.djvu/১৫০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
আফগানিস্থান ভ্রমণ
১৪১

বড়ই বিচিত্র। এখানে অনেক বিদেশী এসে বসবাস করেছে বটে, কিন্তু কেউ বেঁচে থাকতে পারে নি। পুরাতন অধিবাসীদের মাত্র কয়েকজন হিন্দুই টিঁকে আছে। আর অন্যান্য যাদের দেখছেন তারা অন্যান্য স্থান হতে এসে নতুন বসবাস করছে। কতবার যে এ শহরের লোক মরে উজাড় হয়েছে তার হিসাব করা যায় না। শেষবার যখন বরফপাতে গজনীর লোকক্ষয় হয় তখন এমনি ভাবে বরফ পড়েছিল যে, কেউ ঘরের চালের ওপরের বরফও পরিষ্কার করতে পারেনি। মাত্র একটি মুসলমান পরিবার বেঁচেছিল। আর বেঁচেছিল কতকগুলি হিন্দু। হিন্দুদের বাড়ীগুলি পাথরের ছিল তাই তারা রক্ষা পায়। যে মুসলমানটি বেঁচেছিল সে ছিল একজন কসাই। সে এক একটি করে দুম্বা কাটত আর তাই ছেলেদের খাইয়ে চালের ওপরকার বরফ পরিষ্কার করতে পাঠাত। এই করেই সে তার ঘর রক্ষা করতে সক্ষম হয়েছিল।”

 গ্রামের হিন্দু পরিবারগুলিও রক্ষা পেয়েছিল। হিন্দুদের ঘরের ছাদ কখনও সমান থাকত না ক্রমশ উচু থাকায় বরফ আপনি গড়িয়ে পড়ত। হিন্দুদের অনুকরণে মুসলমানেরা ঘর তৈরী করত না। কি জানি হিন্দুর অনুকরণে ঘর করলে যদি ইসলাম ধর্মের ক্ষতি হয়। এখানেও মোল্লাইজমের ব্যভিচার ফুটে উঠেছিল।

 যদিও গজনীর একটি হিন্দুও বরফপাতে মারা যায় নি তবুও হিন্দুর সংখ্যা অতি সামান্যই ছিল। অন্যস্থান হতে হিন্দুরা আসেও নি এবং হিন্দুদের সামাজিক কুপ্রথা পরিত্যাগ ও করে নি। মুসলমানেরা অন্যস্থান হতে এসে খালি বাড়ীতে বসবাস করছিল।

 বরফপাত হওয়াটা ধরে নিলাম আল্লার মরজি, কিন্তু ঘর বানানো তো আপনাদের ওপরই নির্ভর করে। পাথরের ঘর তৈরি করেন না কেন?

 পাঠান আমার কথার উত্তর দিতে পারছিলেন না। বুঝলাম আসল কথাটা কি? যেহেতু হিন্দুরা পাথরের ঘর তৈরি করে বাস করে, অতএব মুসলমানের