পলাতক রুশদের মতিগতি ফিরছিল। পাঞ্জাবী ভলোক এবং অন্য দুজন রুশ-দেশীয় লোক—এই তিন জনে মিলে পলাতকদের খাদ্য, বস্ত্র এবং অর্থ বিতরণ করছিলেন। কাবুলে এদের দুরবস্থা দেখতে পেয়ে শিউরে উঠেছিলাম। স্বীয় মতবাদ বজায় রাখতে গিয়ে মানুষ যে কত দুর্দশা অম্লান বদনে বরণ করতে পারে, সাদা (পলাতক) রুশরা একের নম্বর দৃষ্টান্ত। কিন্তু এদের হঠাৎ মত বদলাবার কারণ কি জিজ্ঞাসা করায় জানতে পারলাম রীতিমত শিক্ষা পাবার পর এর মত বদলিয়েছে।
ভারতীয় ভদ্রলোেক বললেন, এ দুজন ভদ্রলোকই পলাতক রুশদের মত পরিবর্তন করিয়েছেন। এদের আমি মনপ্রাণে ধন্যবাদ জানালাম। তিনি আরও বললেন আফগানিস্থানে যত পলাতক রুশ আছে তারা সত্বরই স্বদেশে প্রত্যাবর্তন করবে। কান্দাহারে একজন পলাতক রুশের পোশাক পরিবর্তন দেখে মনে হল, সে যেন নবজীবন ফিরে পেয়েছে। তাকে জিজ্ঞাসা করেছিলাম রুশ দেশে যাবার জন্য তার প্রবল ইচ্ছা হয়েছে কি? সে বলেছিল “মানুষ চায় কাজ এবং কাজের উপযুক্ত মজুরী। রুশদেশে তা পাওয়া যায়।” এখন ধর্ম সম্বন্ধে কি করবে জিজ্ঞাসা করায় লোকটি বলেছিল “এটা হল ব্যক্তিগত ব্যাপার।” আমি যদি মনে মনে প্রার্থনা করি কেউ জানবে না। একদা ধর্মের দরকার ছিল, বর্তমানে দরকার নেই। জ্ঞান অর্জন মনের উপযুক্ত অনুশীলন দ্বারাই হয়, বাইরের বেখাপ্পা আচার-ব্যবহারের ভেতর প্রকাশ পায় না।
দুদিন এদের সংগে কাটিয়ে তৃতীয় দিন রাত্রি দশটার সময় কান্দাহার পৌঁছলাম।