পাতা:আফগানিস্থান ভ্রমণ.djvu/১৬০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
আফগানিস্থান ভ্রমণ
১৫১

পর্বতের কোনও অংশ সাগরে পরিণত হয় তবে বেলুচিস্থানের কোয়েটা অঞ্চলের সংগে কান্দাহারও ডুবে যাবে।

 সেদিনই সহরের গভর্ণরের সঙ্গে সাক্ষাৎ করি। গভর্ণরের নামে আমার কাছে প্রধান মন্ত্রীর এক খানা পত্রও ছিল। পত্র দেবার পর তিনি আমাকে আদর যত্ন করেছিলেন এবং তাঁর দেওয়া মস্ত বড় একটি বাড়ীতে থাকতে বলেছিলেন। সেখানে খাওয়া থাকা ত পেতামই, উপরন্তু ভোগ বিলাসের ত্রুটি হত না। ভোগ বিলাস মানুষ চায়, আমিও চাই কিন্তু সকল সময় ভোগ-বিলাসের দিকে তাকালে যা চাওয়া যায় সেটা পাওয়া যায় না সেজন্যই গভর্ণরের বাড়ীতে থাকি নি। বাবা ভোলানাথের বাড়ীতেই থাকতে পছন্দ করেছিলাম। যদি কেউ জিজ্ঞাসা করেন, কোনও মুসলমানের বাড়িতে থাকিনি কেন, তারও উত্তর দিয়ে দিচ্ছি। সহরে কোনও প্রগতিশীলের সংগে দেখা হয় নি বলেই অন্যত্র যেতে পারি নি।

 গভর্ণরের সেক্রেটারী খরকা সরিফ এবং বুদ্ধদেবের মূর্তি দেখে যেতে বলছিলেন। বুদ্ধদেবের মূর্তি পরে দেখেছিলাম এবং খরকা সরিফ ফেরবার পথেই দেখেছিলাম। খরকা সরিফ বলতে একটি মস্‌জিদকে বুঝায়। এই মস্‌জিদের বিশেষত্ব আছে। আমান উল্লার সময়ে খরকা শরিফের বিশেষত্ব ছিল না, নাদীর খানের রাজত্বের আরম্ভেই খরকা সরিফের বিশেষত্ব ফিরে আসে।

 যদি কোন লোক কোনও লোককে হত্যা করে এবং সে জানে লোকহত্যা অন্যায়ভাবে করেছে তবে সে খরকা সরিফে আশ্রয় নেয়। খরকা সরিফের আশ্রিত নরহত্যাকারীকে পুলিশ কেশাগ্রও স্পর্শ করতে পারে না। এখানে ধর্মের বিচার নাই। যে কোন ধর্মের লোক খরকা সরিফ নামীয় মস্‌জিদে আশ্রয়ে নিতে পারে, মুসলমান মোল্লা সেই আশ্রিত লোককে তাড়িয়ে দেবার অধিকার রাখে না। এই হল খরকা শরিফের বিশেষত্ব। এমন বিশেষ স্থান না দেখলে আমার পক্ষে আফগানিস্থান ভ্রমণই পণ্ড হয়ে যেত।