আফগানিস্থানে সমাজের শাসন কড়া বলে সেখানকার ভিক্ষাজিবীদের বড়ই দুর্দশা। ভিক্ষাতে ভিক্ষুকের পেট ভরে না। বস্ত্রের যোগাড় হয় না। মাথা গুঁজবার উপযুক্ত আশ্রয়ও তাদের মেলে না। এরূপ অবস্থায় শীতপ্রধান দেশের গরিব লোকদের ভয়ানক কষ্ট পেতে হয়। এ কথাটা আমান উল্লা ভাল করেই বুঝতে পেরেছিলেন, সেজন্যই দেশের দারিদ্র্য যাতে দূর হয় তার চেষ্টা তিনি বিশেষ চেষ্টা করেছিলেন। আমার মনে হয় বাচ্চা-ই-সাক্কো দারিদ্রকে আরও বেশি টের পেয়েছিলেন। সেজন্যই তিনি আমান উল্লার চেয়েও দ্বিগুণ উৎসাহে এবং দ্রুত দেশের দারিদ্র্য মোচন করতে গিয়ে বিদেশীর বিরাগভাজন হন। লোকে বলে একদিন জনৈক হিন্দু পুঁজিপতি নাকি বাচ্চা-ই-সাক্কোকে ভয় দেখিয়ে বলছিলেন রাজ্য-দখল করতে পার কিন্তু রাজ্য চালাতে হলে আমার কাছে তোমাকে আসতেই হবে। বাচ্চা-ই-সাক্কো তার দ্বারস্থ যাতে না হতে হয় সেজন্য নোট তৈরী করেন এবং সেই নোট নিতে সর্বসাধারণকে বাধ্য করেন। আফগানিস্থানে তখনও নোটের চলন হয় নি, বর্তমানে অবশ্য হয়েছে।
কয়েকদিন পরে পুরাতন বৌদ্ধ-যুগের স্থাপত্যশিল্প দেখার জন্য বেরিয়েছিলাম। পথে দেখা হয়েছিল কয়েকজন পাঞ্জাবী মোটর ড্রাইভারের সংগে। ওদের কথায় বুঝলাম, এরা আর দেশে ফিরে যাবে না, সুযোগ পেলেই রুশ দেশে যাবে। দেশের প্রতি বীতশ্রদ্ধ হবার কারণ জিজ্ঞাসা করায় তারা বললে, পাঞ্জাব যদিও বেশ সুন্দর দেশ, খাদ্যের অভাব নেই, তবুও অভাব-গ্রস্তদের পক্ষে কোন মতেই সেখানে বাস করা উচিত নয়। কটা মাত্র সরকারী চাকুরি আছে, তাই নিয়ে সেখানে কামড়া কামড়ি চলছে। কাজ আছে, মজুরি নেই। সিনেমা আছে, দেখবার পয়সা নেই। শরীরে শক্তি আছে, মাথায় বুদ্ধি আছে কিন্তু সদ্ব্যবহারের পস্থা নেই। ড্রাইভারগুলি সবাই মুসলমান। তাদের বললাম “দেশ ছেড়ে চলে বাওয়া ভাল নয়, দেশকে অন্যান্য দেশের মত গড়ে তোলা তাদের কর্তব্য এবং এসম্বন্ধে স্থিরচিত্তে চিন্তা করা উচিত। রুশ দেশকে বর্তমান অবস্থায় উপনীত