মুসলমানদের পাড়ায় এবং নিকটস্থ গরিব লোকদের গ্রামেই কাটিয়েছিলাম। গ্রামের লোক ইউরোপীয় পোশাক অনেকেই পছন্দ করত না এবং আমার কাছে অনেকেই বলত এ পোশাক এদেশে ভাল মানায় না। আমি ওদের ধর্মযাজকদের সামনেই বলতাম, ইউরোপীয়ান পোশাকই এদেশের পক্ষে উপযুক্ত এবং যুক্তি দিয়ে তা বুঝিয়েও দিতাম। কতৃপক্ষ একদিনও আমার এরূপ উক্তির কোনরূপ প্রতিবাদ করেন নি, কিন্তু একটি ভারতীয় চাপরাশি একদিন আমার কথার প্রতিবাদ করেছিল।
বনভোজন করার জন্য সেদিন আমরা এক গ্রামে গিয়েছিলাম। সংগে করে একটা জ্যান্ত মোরগও নিয়েছিলাম। মোরগটা হত্যা না করে সংগে নিয়ে যাবার একমাত্র কারণ গ্রামে মোরগটার গলা না কেটে এক কোপে কাটলে গ্রামবাসী রাগ করে কি না দেখতে চেয়েছিলাম। আমার সংগীরা এক কোপে কখনও মোরগ কাটে নি; সেজন্য আমাকেই সে-কাজটি সম্পন্ন করতে হয়েছিল। দুএকজন গ্রামের লোেক মোরগ-হত্যা দেখেও ছিল, কিন্তু তারা কেউ কিছু বলেনি। কান্দাহারের হিন্দুরা বলে, মুসলমানরা তাদের অমতে কোন জীবকে হত্যা করতে দেয় না সেজন্য তারা জীবহত্যা করা বন্ধ করে দিয়েছে। পরে বুঝেছিলাম হিন্দুরা মাংস খেতে খুব ভাল করেই জানে কিন্তু ঠেকায় পড়লেও তারা মোরগ হত্যা করতে সক্ষম হয় না। এরূপ যাদের দুর্বল মন তারাই নিপাত যাবার উপযুক্ত। এরূপ আয়েসী লোকের বেঁচে থাকা মানে ভূ-ভার বৃদ্ধি করা।
যে গ্রামে বনভোজন করতে গিয়েছিলাম সেই গ্রামের লোক দেখতে বড়ই নিরীহ কিন্তু তাদের মন ভীরু নয়, সজাগ এবং সাহসী। আবাদি-ভূমি কোন মতেই কারো কাছে ছেড়ে দিতে রাজি নয়। আবাদি-ভূমি নিজের হাতে রাখবার জন্য সর্বদাই শস্যবীজের মত ঘরে অস্ত্রও মজুত রাখে। দরকার হলে গ্রামকে গ্রাম ছাউনীতে পরিণত করতে পারে। গ্রামের লোক সুখী তবে তাদের প্রাচুর্য নেই। গ্রামে ধর্মের গোঁড়ামি ছিল না। তারা সহরের মোল্লাদের মত মালা