সহকারী কর্মচারী বলে মনে করেছিল কিন্তু ইয়াকুব আমার পরিচয় দেওয়ায় তারা আবার নিশ্চিন্ত মনে জুয়ায় মেতে উঠল। মোটরের আড্ডায় বেশিক্ষণ দাঁড়ালাম না। পথে ইয়াকুবকে বললাম, এদের হাত হতে তোমাকে বাঁচতে হবে। যদি আত্মরক্ষায় অক্ষম হও তবে ভবিষ্যতের আশা-ভরসা চিরজীবনের তরে লোপ পাবে। সে ঘাড় নেড়ে জানালে, তথাকথিত হীনবৃত্তি অবম্বন করলেও মহান আদর্শবাদ দ্বারা সে অনুপ্রাণিত, কলুষ-কালিমা তার চরিত্রকে স্পর্শও করতে পারবে না। মধ্যবিত্ত পরিবারের ছেলে স্ব-ইচ্ছায় হীনবৃত্তি অবলম্বন করেছে নিজের দেশকে জানাবার জন্য। এমন লোকের সহযাত্রী হওয়া সৌভাগ্যের বিষয়।
এখানকার হিন্দু যুবকদের একাদশী ক্লাব নামে একটি ক্লাব আছে, কান্দাহার ছাড়বার পূর্বে ক্লাবের মেম্বারগণ আমাকে নিমন্ত্রণ করলেন। আমিও নিয়ম রক্ষা করতে গিয়েছিলাম। আসরে হাজির হবার পর সর্বপ্রথম স্বাগত করা হল কিন্তু সত্বরই আমি বিদায় নেব জেনে সমবেত যুবকগণ দুঃখ প্রকাশ করলেন। কিন্তু তখনও আমি একাদশী ক্লাবের স্বরূপ বুঝতে সক্ষম হইনি।
আমার কথা শেষ হবার পর, পেয়ালাভর্তি করে সবাই ভাং খেতে আরম্ভ করল। আমাকেও খেতে দেওয়া হয়েছিল, আমি কিন্তু এই নিকৃষ্ট পানীয় গ্রহণে রাজি ছিলাম না। গাঁজাও শুরু হল। গাঁজার গন্ধ অসহ্য হয়ে ওঠায় সভা ত্যাগ করলাম। পর্যটককে নানা প্রতিকূল অবস্থায় পড়তে হয়। পর্যটকের স্বাস্থ্য ঠিক না রাখতে পারলে পর্যটন অসম্ভব। দুর্গমপথে চলবার পক্ষে স্বাস্থ্যের প্রয়োজনীয়তা খুব বেশি। সেজন্যই অভদ্রতা দেখিয়ে আমাকে একাদশী ক্লাব পরিত্যাগ করতে হল।
একাদশী ক্লাবে যেতে হিন্দু যুবকদের কোনরূপ নিষেধ নাই। সবাই জানে একাদশী ক্লাবে কি হয়, অথচ হিন্দু সমাজ এই ক্লাবকে বিনা প্রতিবাদে প্রশ্রয় দিয়ে থাকে। এদের সভা ছেড়ে পথে দাঁড়ালাম এবং কতক্ষণ মুক্ত বাতাস সেবন করে আশ্রমে ফিরলাম। ভোলানাথ আমাকে দেখেই বললেন “আমি ভাল