পাতা:আফগানিস্থান ভ্রমণ.djvu/১৭১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১৬২
আফগানিস্থান ভ্রমণ

করেই জানি আপনি বেশিক্ষণ বসতে সক্ষম হবেন না। কি জঘন্য মনোবৃত্তি এখানকার হিন্দু যুবকদের! যাদের যৌবন শুধু ইন্দ্রিয় সুখভোগে, সেই মেকাণ্ড হীন যুবক তার দেশ বা জাতির কি কোন কার্য হতে পারে?”

 ভোলানাথকে ছেড়ে আসতে আমার বড়ই কষ্ট হচ্ছিল। কিন্তু তা হলে কি হবে। আমার কাছে ঘরের মায়ায় চেয়ে পথের আকর্ষণই প্রবল; তাই পথেই এসে পড়লাম। সাথী পেলাম ইয়াকুবকে। আমার সাইকেল চালিয়ে ইয়াকুব মোটমের সংগে পাল্লা দিচ্ছিল। ভাবি নি সাইকেল মোটরের সংগে টেক্কা দিয়ে আগে যেতে পারবে। শহর হতে বের হয়ে বড় জোর দু’ মাইল পথ ভাল পেয়েছিলাম তারপরই মোটরের চাকা কাদায় ডেবে যাচ্ছিল। দেখলাম এরূপ অবস্থায় যদি মোটরে বসে থাকি তবে হয়তো আবার পায়ে ব্যথা শুরু হবে। সেজন্য ইয়াকুবের কাছ হতে সাইকেল নিয়ে আমি এগিয়ে চললাম। কথা রইল সন্ধ্যার পূর্বে আমার কাছে মোটর না পৌছলে আমিই ফিরে আসব।

 সেদিন আমাদের গৃস্ক নামক স্থানে পৌছবার কথা ছিল; কি গৃস্ক পৌঁছান হয় নি, পথেই রাত কাটাতে হয়েছিল। আমাদের সংগে প্রচুর খাদ্য ছিল, পথে কোনও কষ্ট হয় নি। গৃস্ক ও কান্দাহারের মধ্যে কোন গ্রাম ছিল না। কাঁকর এবং কাদায় পূর্ণ উন্মুক্ত প্রান্তর। এমন পথে চলা কত আরামের! এর প্রথম কারণ উন্মুক্ত প্রান্তরে চলা এবং অপরিচিত লোকের সংগে পরিচয় করা একটি আর্ট। এই আর্ট যার জানা নাই সে কখনও পথের সুখ অনুভব কতে পারবে না। আমার চলার সময় সংগে ছিল একটি শিক্ষিত আফগান যুবক; তার সংগে কথা বলে আমার সময় আনন্দের সহিত অতিবাহিত হ’ত। পথে দুদিন কাটিয়ে তৃতীয় দিন সকাল বেলা আমরা গৃস্ক পৌছলাম। সেখানে আমরা একটি ছোট ঘর ভাড়া করে সারাদিন বিশ্রাম করলাম। ড্রাইভার বিশ্রাম করবার ফুরসৎ পেল না। সে মোটর পরিষ্কার করতে লাগল।

 গৃস্ক ছোট গ্রাম, লোকসংখ্যা হাজারের বেশি নয়। বেলুচিস্থান হতে উটের