পাতা:আফগানিস্থান ভ্রমণ.djvu/১৭২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
আফগানিস্থান ভ্রমণ
১৬৩

পিঠে পণ্যদ্রব্য আমদানি-রপ্তানির ফলে এ স্থানটি একটি বাণিজ্যকেন্দ্রে পরিণত হয়েছিল। গ্রামের মাঝ দিয়ে একটা প্রশস্ত পথ, তারই দুদিকে ছোট ছোট মেটে ঘর। কোনটাতে দোকান আর কোনটাতে ছোট ছোট কারখানা। কারখানা গুলিতে দুম্বার লোমের কম্বল, দস্তানা, পৌস্তিন এসব প্রস্তুত হচ্ছিল। ইয়াকুবের সংগে গ্রামখানা বেড়িয়ে আসলাম। গ্রামে দ্রষ্টব্য বিশেষ কিছুই ছিল না। দেখলাম গ্রামবাসীরা সবাই দারিদ্র এবং অজ্ঞানতার অন্ধকারে সমাচ্ছন্ন। ইয়াকুব বল্‌ছিল এখান হতে একটি পথ বেলুচিস্তান পেরিয়ে সাগরতীর পর্যন্ত গিয়েছে।

 গৃস্কের পর হতেই শুরু হল কর্দমাক্ত পথ। পথে মোটর চলতেও পারে না। সেজন্য সাইকেল নিয়ে বেরিয়ে পড়লাম। তিরিশ মাইল পথ এগিয়ে গিয়েও এমন একটা স্থান পাইনি যেখানে আশ্রয় নেওয়া যায়। উত্তর দিকে ঢেউ-খেলানো সারি সারি পাহাড়, দক্ষিণ দিকে যতদূর দেখা যায় অনন্ত প্রসারিত প্রান্তর ক্রমনিম্নভাবে। দিগন্তে মিশেছে। দুদিকের দৃশ্যাবলীই নয়নমুগ্ধকর। কিন্তু ভাবনা হল তিরিশ মাইল পথ অতিক্রম করে মোটরকার আসতে সক্ষম হবে কি না?

 যাহোক বিকালের দিকে মোটর এসে পৌঁছল। আমি তাতে উঠে বসলাম এবং আরও এগিয়ে গিয়ে একটি রুতবায় আশ্রয় নিলাম। পূর্বাকালে বৈদেশিকরা ভারত আক্রমণের সময় পথে ঘরবাড়ী করেছিল। তার এখন অস্তিত্ব নেই, শুধু ইটের স্তুপ পড়ে আছে। কোন কোন রুতবায় লোকজন নেই, কোথাও বা কয়েকজন লোক এক পয়সার জিনিস পাঁচ পয়সায় বিক্রি করবার জন্য বসেছিল। আমাদের কাছে সকল জিনিসই ছিল। তাদের মনোকষ্ট লাঘব করবার জন্য এক ডজন ডিম কিনলাম।

 এভাবে চলে আমরা সাবজাওয়ার নামক স্থানের কাছে এসে পৌঁছলাম, এদিকের পথও মোটর চলাচলের পক্ষে উপযোগী নয়। এখান হতে ইয়াকুবকে নিয়ে কখনো পায়ে হেঁটে কখনো বা সাইকেলে চড়ে সাবজাওয়ারের দিকে অগ্রসর হলাম। কতক্ষণ যাবার পর উপর হতে একখানা গাড়ী আসতে দেখলাম।