পাতা:আফগানিস্থান ভ্রমণ.djvu/১৭৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
আফগানিস্থান ভ্রমণ
১৬৯

এসে বললেন তিনি হিরাতে অতিকষ্টে একটি আস্থানা পেয়েছেন এবং এখানেই তিনি সাধারণ ভাবে সাধারণের সংগে মেলামেশার সুযোগ করে নিতে পারবেন। হিরাতের গুরুত্বও কম ছিল না। একদিকে পারস্য অন্যদিকে রুশিয়া। বিপদে আপদে যে কোন দেশে পালিয়ে যাবার সুযোগ ছিল। ইয়াকুব হিরাতের মাহাত্ম্য বলার পর তাঁকে বললাম যদি ভাল মনে করেন তবে এখানেই কর্মক্ষেত্র করে নিন। তিনি হিরাতেই কর্মক্ষেত্র করবেন বলেছিলেন।

 হিরাতে পর্যটকদের কতকগুলি নিয়ম মানতে হয়। সে নিয়মগুলি হল যে-কোন পর্যটকই হিরাতে আসুন না কেন, তাঁকে গভর্ণরের কাছে যেতে হবে। পর্যটকের অভাব অভিযোগ জেনে গভর্ণর তার প্রতিকার করেন উপরন্তু প্রত্যেক পর্যটককে একশত টাকা করে দক্ষিণাও দেন। আমি হিরাত গভর্ণরের কাছে উপস্থিত হয়ে একখানি ছোট ছুরি এবং এক জোড়া রংগিন চশমার প্রার্থনা জানাই। এ দুটি জিনিসের অভাবে আমি বিশেষ অসুবিধা ভোগ করছিলাম। গভর্ণর আমার প্রার্থনা পূরণ করে বললেন “আফগানিস্থান এখনও ততটা উন্নত হয়নি, আফগানিস্থানে এসে হয়তো আপনার অনেক দুঃখ-কষ্টই হয়েছে, আফগানিস্থানের লোকের পক্ষ হতে আমি আপনার কাছে ক্ষমা চাইছি। আফগানজাতের যদি কেউ আপনার কোন অনিষ্ট করে থাকে, তবে তাদের ক্ষমা করবেন। পর্যটকদের পীড়ন করে কোন লাভ হয় না। তাদের খুশী করাই ভাল, কারণ তাঁরা অমর নন এটা সত্য। কিন্তু দুনিয়ার যে প্রত্যক্ষ অভিজ্ঞতা তাঁরা লিপিবদ্ধ করে যান তা অনন্তকাল মানবসমাজের বহু কাজেই আসে। আপনার প্রতি যদি আমার দেশের লোক অন্যায় ব্যবহার করে থাকে তবে তা আপনি নিশ্চয় লিখবেন, সে কলংক আমাদের চিরন্তন হয়ে থাকবে। এজন্যই আমি ভূপর্যটকদের বৈদেশিক আক্রমণকারীদের চেয়েও বেশী ভয় করি।” এই বলে হিরাত গভর্ণর একশত টাকার একটি থলি আমার হাতে দিয়ে বিদায় নিলেন।