পাতা:আফগানিস্থান ভ্রমণ.djvu/২০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
আফগানিস্থান ভ্রমণ
১১

 অফিসার অনেকদিন হংকং-এ ছিলেন। তাঁর পোশাক দেখেই অনুমান করেছিলাম তিনি একজন উঁচুদরের অফিসার হবেন। আমার ধারণা যে ঠিক তা তাঁর সংগে কথাবার্তাতেই বুঝতে পেরেছিলাম। আফগানিস্থানে যাদের সংগে পরিচিত হয়েছিলাম তাদের অধিকাংশই ঈশ্বরের নামে আমাকে আশীর্বাদ করেছিলেন। কিন্তু এই অফিসারটি আমাকে জানালেন শুভেচ্ছা।

 কাবুল, কান্দাহার, গজনী ইত্যাদি ভ্রমণ করে আফগানিস্থানের সৈনিক বিভাগের অনেক কথাই পরে জেনেছিলাম। আফগানিস্থানে নানা শ্রেণীর লোকের বাস। কতকগুলি সম্প্রদায়, মিলে আফগান জাতের গড়ন হয়েছে। সমস্ত সম্প্রদায়ই একই ধর্মের অন্তর্গত নয়, একই সম্প্রদায়ে আবার বিভিন্ন ধর্মও আছে। যেমন হিলজাই সম্প্রদায়। এই সম্প্রদায়ে হিন্দুও আছে, মুসলমানও আছে। ওরা যখন স্বগ্রামে বসবাস করে, তখন নিজেদের সুবিধার্থে হিন্দু এবং মুসলমান বলে পরিচিত হয়, কিন্তু বিদেশে গেলে সবাই হিলজাই বলেই পরিচয় দেয়। আমাদের দেশে যত কাবুলিওয়ালা দেখতে পাই তাদের মধ্যে অনেক হিন্দু আছে, আমরা তাদের চিনতে পারি না। আমাদের কাছে এরা সবাই পাঠান ও মুসলমান।

 লোকসংখ্যা অনুযায়ী প্রত্যেক সম্প্রদায়ই দেশরক্ষার্থে সেপাই সরবরাহ করতে বাধ্য। সম্প্রদায়ে কত হিন্দু কত মুসলমান আছে তার কোন প্রশ্নই ওঠে না। আফগান সরকার ভাল করেই অবগত আছেন কোন্ সম্প্রদায়ে লোকসংখ্যা কত। তাঁরা প্রত্যেক সম্প্রদায়ের মণ্ডলকে জানিয়ে দেন যে তাকে এত সেপাই বৎসরে দিতে হবে। মণ্ডল আদেশ পাওয়ামাত্র নির্ধারিত প্রথামত সেপাই সরবরাহ করেন। এতে সম্প্রদায়ের হিন্দুরা বাদ পড়ে না। হিন্দুরা সাধারণত সেপাই-এর কাজ করে না, তারা নিজের সম্প্রদায় হতেই ভাড়া করে লোক পাঠায়। এরূপ ভাড়াটে সেপাই সরকার হতে প্রাপ্য মাইনে তো পায়ই, উপরন্তু যে তাকে ভাড়া করে পাঠায় সেও মাইনে দেয়। এই ভাড়াটে সেপাইদের