পেডেল করছিলাম। দু’ একখানা পর্ণকুটীর পথের পাশে দেখতে পেলাম। কুটীরগুলির কাছে গিয়েছি, কুটীরবাসীদের সাথে কথা বলার চেষ্টা করেছি ওদের মনোভাব জানবার জন্য। কিন্তু কই কেউ তো আমাকে হত্যা করলে না? অনেকের বাড়ীতেই ছোরা এবং ছোট বন্দুক ছিল, কিন্তু আমাকে তা দিয়ে আক্রমণ করেনি।
আমাদের দেশে যেমন করে সূর্য অস্ত যায়, ওদের দেশেও ঠিক তেমনি সূর্য অস্ত যাচ্ছে। আমি ডাক্কা নামক ছোট একটি গ্রামের কাছে পৌঁছলাম। দূর হতে গ্রামের প্রকৃত চেহারা মালুম হল না। গ্রামে শ্রী ছিল না। গ্রামে প্রবেশ করে বুঝলাম সত্যই গ্রাম শ্রীহীন।
রাত্রে থাকার জন্য গ্রামের প্রায় সমুদয়টাই ঘুরলাম। শেষটায় যখন কোথাও স্থান পেলুম না, তখন কুমিদানের অফিসে গেলাম। আমাদের দেশে যেমন পাঁচ-সাতটা গ্রাম নিয়ে একটা পুলিশ স্টেসন থাকে, আফগানিস্থানে কিন্তু তা নয়। এখানে প্রত্যেক গ্রামেই একজন করে দারোগা আছেন। দারোগাকে কুমিদান বলে। ডাক্কার কুমিদান একজন যুবক। তিনি আমাকে সাদরে গ্রহণ করলেন। দেশ-বিদেশের সংবাদ অবগত হবার জন্য নানারূপ প্রশ্ন করলেন। তাঁকে আমার অভিজ্ঞতা বলবার পর বিনয়সহকারে জানালাম, আমি এখানকার হিন্দুদের অবস্থা জানতে চাই, যদি দয়া করে সে-বিষয়ে সাহায্য করেন তবে বাধিত হব। আমার প্রস্তাব শুনে কুমিদান খুব সন্তুষ্ট হলেন বলে মনে হ’ল না।
যা হোক, তিনি একজন লোক আমার সংগে দিয়ে হিন্দুদের বাড়ীর দিকে পাঠিয়ে দিলেন। রাত্রের অন্ধকারে কয়েকটি হিন্দু বাড়ীতে গিয়ে দেখলাম এরা নির্জীবের মত দিন কাটিয়ে যাচ্ছে। এদের শরীরে তেজবীর্য আছে বলে মনে হয় না। প্রত্যেকের শরীর রুগ্ন এবং দেখলেই মনে হয় আয়েসী। ওরা আমাকে একটুও প্রীতির চক্ষে দেখলে না। তারা হয়ত এই ভেবে