শংকিত হচ্ছিল যে আমি তাদের বাড়ীতে থাকতে গিয়েছি। একজন হিন্দুকে দেখে যারা শংকিত হয়, অতিথি গ্রহণে ভীত হয়, তাদের বাড়ীতে থাকা পাগলের পাগলামী ছাড়া আর কি হতে পারে। অবশেষে কুমিদানের বাড়ী ফিরে এলাম।
ফিরে এসে দেখলাম কুমিদানের মুখ ভার। এখানকার হিন্দুরা মুসলমানের বাড়ীতে খায় না, সেজন্য কুমিদান আমার খাওয়া-দাওয়ার ব্যবস্থার জন্য ভাবিত হয়ে পড়েছিলেন। কুমিদান সুন্নি মুসলমান। তাঁকে চিন্তান্বিত দেখে বললাম, মহাশয়, আমি হিন্দুদের বাড়ীতে গিয়েছি বলে হয়তো ভেবেছেন আমি ওদের মতই মনোবৃত্তি পোষণ করি—এটা আপনার ভুল ধারণা। আমি গিয়েছিলাম, এখানকার হিন্দুরা কেমন করে ধ্বংসের পথে এগিয়ে চলেছে তা দেখতে। যদি দেশে গিয়ে বলতে পারি, নতুনের প্রতি সম্পূর্ণ বিমুখ হয়ে শুধু পুরাতন আচার-পদ্ধতি আঁকড়ে ধরে থাকলে কি করে একটা জাত ধরাপৃষ্ঠ হতে বিলুপ্ত হতে থাকে, তাতে হিন্দুদের উপকার হতে পারে। এই হতভাগারা টাকার কুমীর, অথচ কৃপণ। ওরা নিজেদের স্বাস্থ্যের জন্যও টাকা খরচ করে না, টাকা খরচ করে স্বর্গে যাবার জন্য। এদের মুখে হাসি নেই, এরা অতিথি দেখলে ভয় পায়। এদের এই অবস্থা মরবার পূর্বলক্ষণ ছাড়া আর কিছু নয়। সনাতনী হিন্দুরা নিজের ধ্বংসের কারণ না অন্বেষণ করে অপরের ঘাড়ে দোষ চাপিয়ে দিয়েই সুখী হয়। আফগানিস্থানের শিয়া শ্রেণীর মুসলমানও মাইনোরিটি, তারাও পাঠানদের পছন্দ করে না, কিন্তু তাদের সামাজিক রীতিনীতিতে গ্রহণ করার ক্ষমতা থাকায় পাঠানদের একটুও ভয় করে না। সনাতনী হিন্দুদের যদি গ্রহণ করার ক্ষমতা থাকত, তবে কখনও পাঠানের ঘাড়ে সকল দোষ চাপিয়ে দিয়ে মুখ বুজে থাকত না।
খাওয়ার বন্দোবস্ত হ’ল। খেতে বসলাম। ভাত, দুম্বার মাংস এবং কাঁচা পেঁয়াজ। ভাতে ঘি দেওয়া ছিল না। হিন্দুরা চাউলে ঘি মাখিয়ে রান্না করে, এতে অগ্নিমান্দ্য হয়। কিন্তু সাদা ভাতে অগ্নিবৃদ্ধি হয়। খেতে