বসে মাংস এবং ভাত কুমিদানের চেয়েও দ্বিগুণ খেতে সক্ষম হয়েছিলাম। যদি কুমিদান আমার শক্তির পরিচয় চাইতেন, তবে তাঁকে প্রতিযোগিতায় পরাস্ত করতে বেগ পেতে হত না।
আফগান জাতকে যারা নিষ্ঠুর নরঘাতী বলে চিত্রিত করেছে, তাদের প্রতি ঘৃণা হয়েছিল এবং আহারের পর কুমিদানকে আফগানিস্থান সম্বন্ধীয় সেই সব মিথ্যা রটনাগুলির কথা বলেছিলাম। শুনে তিনি দুঃখ করে বলেছিলেন, এ তো সামান্য কথা, পৃথিবীতে কত হীন মিথ্যাবাদীই আছে যারা তিলকে তাল করে লোকসমাজে প্রচার করে। পরে বুঝতে পেরেছিলাম, আফগানিস্থানের পাঠানদের বিরুদ্ধাচরণ সনাতনী হিন্দুরাই বেশী করেছে।
পরদিন অল্প সময়ই গ্রামে ছিলাম। এই সময়টুকুতেই বুঝতে পেরেছিলাম, গ্রামের ধ্বংসোন্মুখ হিন্দুদের খুশী করার জন্য গ্রামের ভেতর কোন মুসলমান গোহত্যা করে না। গোহত্যা হয় গ্রামের বাইরে বহুদূরে। কাটা মাংস গ্রামে গোপনে আসে, এবং গোপনেই বিক্রী হয়ে থাকে। আফগানরা এমনিভাবেই হিন্দুদের মনস্তুষ্টি করে থাকে। অথচ আজ যে হিন্দু যুবতী নিষিদ্ধ মাংস দেখে বমি করে, সেই রমণী যখন শরীরের ক্ষুধা মেটাবার জন্য গ্রামের কোন মুসলমান যুবকের সংগে চলে যায়, তখন আর ভক্ষ্যাভক্ষ্যের কথা মনে থাকে না। উদারতার গুণে কোন কোন হিন্দু উন্নতির পথে অগ্রসর হচ্ছে, পক্ষান্তরে ঐ গুণটির অভাবে অনেকে নিজেদের সর্বনাশ ডেকে আনছে।
ডাক্কা গ্রাম পরিত্যাগ করার পূর্বে স্থানীয় বাড়ীঘরের দিকে একটু লক্ষ্য করতেই দেখতে পেলাম, অনেক বাড়ীর দেওয়ালে বন্দুকের গুলিবিদ্ধ হয়ে যে ছিদ্র হয়েছিল, তা এখনও বন্ধ করা হয়নি। ভবিষ্যৎ বংশধরদের দেখাবার জন্যই হয়তো গুলিবিদ্ধ দেওয়ালগুলি যেমন ছিল, তেমনি অবস্থায়ই রাখা হয়েছে। এরূপ কয়েকটি ঘর দেখার পর চিন্তিত হয়ে পড়লাম, কারণ এই ছিদ্রগুলি ভারতীয় সেপাইদের কুকীর্তির নিদর্শনচিহ্ন। ভারতীয় সেপাই-এর