করে। আফগানিস্থানের শিয়ারা অন্য জাতের লোক। ওরা জাতে মোংগল বা মোগল। ভাষাও ওদের পৃথক। এরা আলু চাষ করতে বেশ পটু। তখন নাকি আলু উঠিয়ে আনার সময় ছিল; সেজন্য গ্রামের লোক সপরিবারে আলুর ক্ষেতে চলে গিয়েছিল।
এদের গৃহনির্মাণ-পদ্ধতি পাঠানদের মত নয়। এখনও এরা আদিম মোংগল জাতির মতই ঘর তৈরী করে। আদিম মোংগল ধরনের ঘর ভারতের বাইরে সর্বত্রই দেখা যায়। ভারতের মধ্যে এখনও বাংলা, আসাম এবং উড়িষ্যাতে মোংগল পদ্ধতির ঘর বিরল নয়। পুরীতে যারা জগন্নাথদেবের মন্দির দেখতে যান তাঁরা যদি পূজারীদের ঘরগুলি ভাল করে পর্যবেক্ষণ করেন, তবেই বুঝতে পারবেন মোংগল ধরনের ঘর কি রকমের হয়। এশিয়ার অনেক দেশে মোগলদের বসবাস দেখেছি। চেংগিজ খান মোগল ছিলেন। পৃথিবীর সভ্য সমাজ এখনও তাঁর নাম শুনলে আতংকে কম্পিত হয়। হিন্দুস্থানের শাহান্শা আকবরের নাম আমাদের দেশে কে না জানে? কিন্তু গ্রাম্য মোংগলদের চাল-চলন ও দরিদ্রতা দেখলে লজ্জা হয় এবং মনে হয়, এদেরই পূর্বপুরুষ কি অতীতে আমাদের পূর্বপুরুষকে পরাজিত করেছিল এবং বহু বৎসরব্যাপী রাজত্ব করেছিল?
গ্রাম পরিত্যাগ করে পথে এলাম। পূর্ণ উদ্যমে সাইকেল চালাতেছিলাম। বিকালের দিকে একখানা মাঝারি গোছের গ্রামে এলাম। এ-সব গ্রামে থাকবার কোন কষ্ট নেই। কেন কষ্ট পেতে হয় না, সে সম্বন্ধে দু’-একটি কথা বলা দরকার মনে করি। রাত্রে আফগানিস্থানের পার্বত্য অঞ্চলে ভয়ানক শীত অনুভূত হয়। শীতের সময় বাইরে থাকা অসম্ভব। গরমের সময় বাইরে ঘুমাতে হ’লে কম্বলের দরকার হয়। গ্রামে মুসাফিরখানা ছিল না; সেজন্য রাত কাটাবার জন্যে আমাকে মসজিদে আশ্রয় নিতে হ’ল। যিনি মসজিদে আজান দেন তাঁরই সংগে আমার সর্বপ্রথম আলাপ হয়। তিনি আমার বাড়ী কোথায় এবং