আরম্ভ করি। অবশেষে ভদ্রলোক আমাকে তাঁর বাড়ীতে নিমন্ত্রণ করেন। পাঠান মহাশয়কে সংগে নিয়েই রাত্রে তাঁর বাড়ীতে যাই।
ভদ্রলোক অবিবাহিত। বাড়ীতে দু’টি লোক কাজ করে। উভয়েই প্রৌঢ়। তাঁর বাড়ী দেখে মনে হ’ল, তিনি একজন ধনী এবং আত্মগোপনকারী। সবই দেখতে হয় কিন্তু উপযাচক হয়ে কিছুই জিজ্ঞাসা করতে নেই। তিনি সেখানে কি করেন, কি করে খরচ চলে—জিজ্ঞাসা করিনি, পাঠান মহাশয়কেও এ সম্বন্ধে কিছুই বলিনি। রাষ্ট্রনীতিক্ষেত্রে সর্বত্র সন্দেহ বিরাজমান, বিশেষ করে যাঁরা বিদেশে লুকিয়ে থাকেন।
খাদ্যের পরিবেশন আমাদের প্রথাতেই হয়েছিল। খেতে বসে বাঙালী ভদ্রলোক বললেন, “এখান থেকে একটা পথ রুশ-সীমান্তের দিকে চলে গেছে। পায়ে হাঁটার পথ, সাইকেল চালানো অসম্ভব। আপনার সংগে যদি সাইকেল না থাকত, তবে সেই পথ দেখিয়ে দিতাম অথবা সীমান্ত পর্যন্ত সংগে যেতেও চেষ্টা করতাম। ভদ্রলোকের বদান্যতায় সুখী হয়েছিলাম কিন্তু পথের সন্ধান ছাড়া আর কোন কথাই বলা হয়নি।
পাঠানের বাড়ীতে ফিরে দেখলাম, উত্তম বিছানার বন্দোবস্ত হয়েছে। জায়গীরদার পাশের বিছানায় শুয়ে আছেন। লোকটি বেশ সুপুরুষ। পরে জায়গীরদারদের সম্বন্ধে নানা বিষয় জানতে পেরেছিলাম এবং ভাবতে পারছিলাম না, আফগানিস্থানের মত স্থানে যেখানে আর্য সংস্কৃতির অস্তিত্ব এখনও বর্তমান, সেখানে জায়গীরদার-প্রথা কি করে চলতে পারে। হয়ত অনেকে জিজ্ঞাসা করবেন জায়গীরদারের কাজ কি? এ-সব প্রশ্নের উত্তর দিতে আমি অক্ষম এবং আমার ভাষাজ্ঞানও তত নাই যার মারফতে এ-সব কথা বলতে পারি।
পরদিন সকালবেলা ঘুম থেকে উঠে দেখি আবহাওয়া একদম বদলে গেছে। প্রভাত-সূর্য ধোঁয়াটে রংএর মেঘের আড়াল থেকে কোনমতে পৃথিবীর অন্ধকার দূর করছে। বাতাস একদম বন্ধ। তুষারপাত সত্বরই হবে। লক্ষণ দেখে