বলছিলেন, আমিনা যদি সমাজ-দ্রোহী কাজ করে তবে তাকে সুন্নিদের কাছেই বিয়ে দেওয়া হবে। সুন্নিরা সিয়ার কাছে বিধর্মী। বিধর্মীর কাছে বিয়ে হওয়া নরকবাসের তুল্য। আমিনা পিতার কাছ থেকে কঠোর শাস্তির কথা শুনল এবং ভাবল, নরকবাসটা কি রকম দেখাই যাবে এবং সময় ক্ষেপণ না করে দরিদ্র দরজি মামুদের কাছে সরাসরি বিয়ের প্রস্তাব করে। আমিনার প্রস্তাবে মামুদ অবাক হয় এবং চিন্তিত হয়ে বলে, বিয়েত যা’ তা’ কথা নয়, একটু সময় দাও। উভয় সমাজই আমাদের পরিত্যাগ করবে, সামান্য দরজির কাজ থেকেও বরখাস্ত হব, তখন কি করে আত্মরক্ষা করব, সে কথা চিন্তা করা চাই।
চিন্তায় চিন্তায় কয়েক সপ্তাহ কাটল। অবশেষে ঠিক হল সহরের বাইরে পরিত্যক্ত পুরাতন প্রতিমা মন্দিরে স্থান নিলেই গ্রাম্য সামাজিক অত্যাচার হতে রক্ষা পাওয়া যাবে। পূর্বকালের অনেক পরিত্যক্ত বাড়ি গ্রামের পাশে ছিল, সেই বাড়িগুলিকে ভূতের বাড়ি বলেই অনেকে নির্দেশ করত। ভূতের বাড়িতে থাকাও কম সাহসের কাজ নয়। তবুও আমিনা নিজের বাড়ি পরিত্যাগ করে ভূতের বাড়িতে মামুদের সংগে থাকতে রাজি হল। আমিনার এবং মামুদের বিয়ে বিনা পুরোহিতেই সমাপ্ত হয় এবং উভয়ে ভূতের বাড়িতে আশ্রয় নিয়ে সুখে থাকতে আরম্ভ করে।
সুখ বেশি দিনের জন্য স্থায়ী হয় না। মামুদ এবং আমিনা যে সামান্য অর্থ নিয়ে বাড়ি হতে বেরিয়েছিল সেই অর্থ শেষ হল। ঘরে যে দিন একটি যবও ছিল না, সেদিন খাদ্য অন্বেষণে মামুদ ভূতের বাড়ি হতে বের হবার সময় আমিনাকে বলে গিয়েছিল, “ভয় করোনা আমিনা, শীঘ্রই রুটি নিয়ে ফিরে আসিব।”
মামুদ চলে গেলে আমিনা মনে মনে ঈশ্বরের কাছে স্বামীর প্রত্যাবর্তনের জন্যে প্রার্থনা করছিল। কিন্তু আমিনার প্রার্থনা ঈশ্বরের কানে পৌঁছল না। সাইবেরিয়ার নেকড়ের পাল তুষারপাতের সংগে সংগেই শহরে অত্যাচার শুরু