শুধু স্বাধীনতাই সাহায্য করে না, আর্থিক এবং সামাজিক পরিবর্তনেরও সমূহ দরকার হয়। সে দিক দিয়ে আফগানিস্থান যে ভারতের পেছনে পড়ে আছে, একথা অনস্বীকার্য। রাজা আমান উল্লা সে দিকে মন দিয়েছিলেন মাত্র, কিন্তু এরই মাঝে বিদ্রোহ আরম্ভ হয়ে যায়। একটি বিদ্রোহ শেষ হবার পর আর একটি, তারপর নাদির খানের হত্যা। এরূপ দ্রুত রাষ্ট্রবিপ্লবে রাষ্ট্রের অর্থনৈতিক উন্নতি ব্যাহত হয় এবং ফলে আসে দুর্ভিক্ষ এবং নানাপ্রকারের ব্যাধি। আফগানিস্থানে দুর্ভিক্ষ এসেছিল কি আসেনি, সে সংবাদ আমি রাখি নি, তবে চোখে দেখেছি এদিকের লোক এখনও ম্রিয়মাণ অবস্থাতেই আছে।
আন্দাজ তিরিশ মাইল পথ চলে একটি ছোট গ্রামে পৌঁছলাম। গ্রামটি সমতলভূমিতে অবস্থিত। গ্রামের পাশ দিয়ে একটি ছোট জলস্রোত বয়ে চলেছে। তারই স্বচ্ছ জলে হাত-মুখ ধুয়ে গ্রামে প্রবেশ করতে যাচ্ছি এমন সময় কএকটা কুকুর আমাকে আক্রমণ করল। এদের মাঝে বুলডগ একটিও ছিল না। আমি কুকুরগুলিকে ঢিল মেরে যখন তাড়িয়ে দিচ্ছিলাম, তখন একজন লোক নিকটস্থ একটা ঘর হতে বেরিয়ে এল। লোকটি পাতলা এবং গৌরবর্ণ। ফারসি ভাষায় সে আমার সংগে কথা শুরু করল। ফারসি ভাষায় কথা বলাটা যেন একটা বাহাদুরি, আমি হিন্দুস্থানিতে বললাম, ‘ফারসি ভাষায় অভ্যন্ত নই।’ তখন লোকটি আমার সংগে হিন্দুস্থানি ভাষাতে কথা বলতে আরম্ভ করল। দেখলাম, সে বেশ হিন্দুস্থানী বলতে পারে। তাকে জিজ্ঞাসা করলাম ‘এখানে রাত কাটাবার স্থান কোথাও হবে কি না?’ সে তৎক্ষণাৎ তার সঙ্গে যেতে বলল। আমি তার অনুসরণ করে একটি একচালা মেটে ঘরের সামনে এসে দাঁড়ালাম। ঘরের দরজায় তালা লাগান ছিল। তালা খুলে দিয়ে সে একটা চারপাই দেখিয়ে বললে “এই চারপাইএর ওপর বসুন, আমি খাবারের এবং বিছানায় বন্দোবস্ত করছি।” এই বলেই লোকটি এক দিকে বেরিয়ে গেল, কিন্তু হঠাৎ কি মনে করে ফিরে এসে বললে “এক চারপাইএর উপর দুইজনে শুতে আপত্তি আছে কি না?” আমি বললাম