আমি বললাম “আমার কোন আপত্তি নেই, তবে যে ভদ্রলোক আমাকে প্রথম ডেকে এনেছেন তাঁর অনুমতি চাই।”
সেই লোকটি কাছেই দাঁড়িয়ে ছিল। সে আমাকে যাবার অনুমতি দিল। আমি তৎক্ষণাৎ আলিজানের বাড়ির দিকে রওয়ানা হলাম।
আলিজান এখানকার বর্ধিষ্ণু লোক, তাঁর অনেকগুলি ঘোড়া, খচ্চর ও উট আছে, চাষের জমি আছে, পরিবারে অনেকগুলি লোক আছে। তাঁর অনেকগুলি ছেলে মেয়ে। মেয়ে হওয়াটা পাঠানদের পক্ষে সৌভাগ্য। তিনটি মেয়ের পিতার সম্মানের অবধি নেই। আলিজানের বাড়ি বেশ বড়। সামনের ঘরে বসার পর আলিজান বললেন “আপনি নিশ্চয়ই পাঠানদের নিয়মকানুন জানেন? আপনাকে বাইরে গিয়ে শৌচ করতে হবে, স্নানের কোন ব্যবস্থা নেই, তবে হাতমুখ ধোবার জন্য গরম জল পাবেন। এখন বলুন কি খাবেন?” আমি বললাম, “যা আপনারা খান তাই খাব।” আলিজান তৎক্ষণাৎ চা বিস্কুট চিনি-মিশানো নারিকেল এবং অন্যান্য শুকনো ফল এনে হাজির করলেন। আমার আগমন উপলক্ষে আলিজানের বাড়িতে আজ গ্রামের গণ্যমান্য ব্যক্তি সবাই আহার করবেন।
আমাদের চা খাওয়া হচ্ছিল এমন সময় আলিজান তাঁর ভাইকে একটি দুম্বা কাটবার জন্য পাঠালেন, আমি সে কথাটা বেশ ভাল করেই বুঝতে পেরেছিলাম। দুম্বা সাধারণত বাড়িতে কাটা হয় না। কোন অতিথি থাকলে হত্যা কাজটি আরও গোপনে করা হয়, যাতে অতিথি মোটেই টের না পান। এটা হল পাঠানদের প্রথা এবং তাদের সভ্যতার অংগ। আমাদের দেশে হিন্দুরা পাঁঠা বলি দেয় সকলকে দেখিয়ে, মুসলমানরা ছাগল কাটে উঠানের ঠিক মধ্যস্থলে। এ বিষয়ে আফগানিস্থানের প্রথা যে শ্রেষ্ঠই তাতে কোন সন্দেহ নাই।
আফগান জাত বড়ই গল্পপ্রিয়, কিন্তু নিজের দেশের গল্প তারা বিদেশীকে শুনাতে রাজি নয়, তারা বরং বিদেশের কথাই শুনতে চায়। তাদের দৃষ্টান্ত অনুসারে আমাকেও আমাদের দেশের কথা উহ্য রাখতে হল। গল্প যখন জমে