পাতা:আফগানিস্থান ভ্রমণ.djvu/৫৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
আফগানিস্থান ভ্রমণ
৪৯

  সত্যকথা বলতে কোন দোষ নেই। যে দিন হতে আমি স্কুলে যেতে আরম্ভ করেছি সেই শৈশবকাল থেকে কখনও জাগ্রত অবস্থায় মরণের ভয়ে ভীত হই নি। তবে স্বপ্ন দেখে অনেক সময় আমি ভীত হতাম এবং প্রাণ নিয়ে পালাতে পারলেই যেন বাঁচতাম। আজও আমার সেই ভাব এসে পড়েছিল। কত রকমের ভূত প্রেত আমার চারদিকে যেন ঘুরছিল। চোখ খোলা রাখতে চেষ্টা করিছিলাম অথচ চোখ বুজে আসছিল। চেষ্টা করে বসে পড়লাম। তখনও অন্ধকার ছিল। আশে পাশে কিছুই দেখতে পাচ্ছিলাম না। আমার ধারণা ছিল ভরাপেটে শুলে নাকি নানারূপ ভীতিপ্রদ স্বপ্ন দেখা যায়। কিন্তু আমার পেট ভরা ছিল না, ছিল খালি পেট। পরে জেনেছিলাম একেবারে খালি পেট থাকলেও নাকি নানারূপ ভীতিপ্রদ স্বপ্ন দেখা যায়।

  অন্ধকারে অনেক্ষণ বসে থাকতে ভাল লাগছিল না। নিকটস্থ নির্ঝরিণীতে হাত মুখ ধুয়ে ফের বসলাম। কতক্ষণ পর হঠাৎ অদূরে মোরগের ডাক শুনে বুঝলাম গ্রাম নিকটেই। আমার আর দেরী সইল না, তৎক্ষণাৎ গ্রামের দিকে পূর্ণ উদ্যমে সাইকেল চালালাম। কতক্ষণ যাবার পরই একটা জলভর্তি ছোট নালার ধারে এলাম। নালার ওপারেই একটি সরাই হতে হারিকেন লাস্পের আলো আসছিল। সেই আলোয় নূতন আশা মনকে সঞ্জীবিত করে তুলেছিল।

  সরাইএর দরজা এবং নিকটস্থ কাফিখানার এক দরজা তখনও খোলা ছিল। কাফিখানাতে কএক জন লোক চা খাচ্ছিল। আমাকেও চা দিতে বললাম। গ্রামের মসজিদে যিনি আজান দেন তিনিও চা খাচ্ছিলেন এবং হাতের মালা টপকাচ্ছিলেন। মালা টপকানো এদেশে খুব প্রচলিত। মালা টপকানো সম্বন্ধে এখানে কিছুই বলব না, যদি পারি তবে পরে বলব। আমি কোথা হতে এসেছি, কোথায় যাব এবং কি কাজ করি মোল্লা জিজ্ঞাসা করলেন। সংক্ষেপে আমার