পাতা:আফগানিস্থান ভ্রমণ.djvu/৬৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
আফগানিস্থান ভ্রমণ
৫৫

চোখ কটা, চুল পিংগলবর্ণ। তা বলে সে কখনও আর্য বলে নিজের পরিচয় দেয় নি। সাধারণত আফগানিস্থানে দ্রাবিড়, আর্য, মোংগল এবং সিমেটিক‍্দের মাঝে বিবাহ চলে। কিন্তু মোংগলরা এই তিন শ্রেণীর লোকদের সংগে বৈবাহিকসম্পর্ক স্থাপন করে না কারণ মোগলরা প্রায়ই শিয়া। শিয়া এবং সুন্নিতে কেন বিয়ে হয় না সে কথা আমি জানতে চেষ্টা করি নি। যে তিনটি লোক গ্রামে চলে গিয়েছিল তারা মোংগল নয়, যে লোকটি চা এবং রান্নার বন্দোবস্ত করছিল সে মোংগল। সে আলির ভক্ত, মোহাম্মদের নাম সে নেয় না। কিন্তু এই দুর্গন্ধযুক্ত ঘরে মোংগল এবং অমোংগলের একত্র সমাবেশ দেখে সন্দেহ হল, এরা নিশ্চয়ই কোন রাজনৈতিক দলের লোক। ইয়াকুবকে এ সম্বন্ধে কিছুই বললাম না। বালিশে হাত দুটা ছড়িয়ে দিয়ে ওপর দিকে চেয়ে রইলাম। লোক তিন জন ফিরে আসার পর রান্নার বন্দোবস্ত হল। পাঠানদের পাক-প্রণালী আমাদের মত নয়। একদম সদাসিদে। দোকানের নান, চাপাতি আর নুন মাখানো টুকরা মাংস। মাংসগুলিকে একটা লোহার শিকে গেঁথে নেওয়া হল। চায়ের সকল বন্দোবস্তই ছিল। আমাদের খাওয়া এবং হাতমুখ ধুয়ে বসতে আধা ঘণ্টার বেশি লাগিল না।

 পাঠানরা বড়ই গল্পপ্রিয় একথা আগেই বলেছি। গল্পের দিকে আমি ঝুকিনি; তারাই গল্প আরম্ভ করেছিল। আমি শ্রোতা। ফারসি ভাষায় কথা বলছিল, কারণ মোংগল লোকটি পারতপক্ষে পোস্ত ভাষায় কথা বলত না। এদের কথায় ইন‍্ক্লাব শব্দটি বার বার উচ্চারিত হতে শুনে ভীত হয়ে পড়েছিলাম। কারণ লাহোর একটি সংবাদপত্রের নাম ছিল ইন‍্ক্লাব। সেই সংবাদপত্রের কাজই ছিল সাম্প্রদায়িক বিভেদ জাগিয়ে রাখা। ভাবলাম হয়তো এরাও আমাকে নিয়ে একটা বিরোধের সৃষ্টি করছে। আমি তখনও ইন‍্ক্লাব শব্দের অর্থ কি জানতাম না। ইয়াকুবকে বললাম, আমার ধর্ম নিয়ে যদি গুয়া কোন প্রশ্ন উঠিয়ে থাকে। তবে বলে দাও আমি তোমার সংগ এখনই পরিত্যাগ করে বাইরে গিয়ে শোব, আমার সে