করলাম। আমি প্রাকৃতিক দৃশ্য দেখে চললাম আর ইয়াকুব বকে যাচ্ছিল। শেষটায় সে বললে “পাহাড়টার গায়ে আপনি কি দেখছেন?”
—প্রাকৃতিক সৌন্দর্য দেখছি হে?
ইয়াকুব প্রাকৃতিক দৃশ্য পছন্দ করত না। সে বললে “এই পাহাড়ে অনেক ধাতব পদার্থ আছে, যদি জিয়লজিষ্ট এখানে অনুসন্ধান করেন তবে হয়ত স্বর্ণ খনিও পেতে পারেন, কিন্তু আমাদের দুর্ভাগ্য এখনও আমাদের দেশে সেরূপ বন্দোবস্ত হয় নি।”
দ্ধিপ্রহরে আমরা একটি ফেরিওয়ালাকে পথে পেলাম, সে গ্রামান্তরে যাচ্ছিল। সে রুটি ফেরী করে বিক্রি করছিল। তার কাছ থেকে রুটি কিনে দ্বিপ্রহরের ভোজন শেষ করে নিলাম। এরূপ ফেরিওয়ালা আর কোথাও দেখি নি। এক গ্রাম হতে অন্য গ্রামে ফেরি করে জিনিস বিক্রি করতে দেখা যায় না এবং সম্ভবও নয়। কারণ গ্রামগুলি অনেক দূরে দূরে। তবে এই ফেরিওয়ালা কে? পরে জেনেছিলাম। এই লোকটি ফেরিওয়ালা নয়, ইয়াকুবেরই একটি আত্মীয়-পূর্বে সংবাদ পেয়ে আমাদের জন্য খাদ্য নিয়ে এনেছিল। তবে সে রুটির দাম নিল বেশ? বোধ হয় আমি যাতে চিনতে না পারি এইই ছিল তার উদ্দেশ্য। খাবার খেয়ে একটু বিশ্রাম করবার জন্য আমরা একটি স্থান বেছে নিলাম।
স্থানটি পরিষ্কার এবং পাহাড়ের আড়ালে। সামনে বিস্তীর্ণ মাঠ, তারপরই আর একটা পর্বত। অন্য একটা পর্বতের উপর কালো ছায়া বেশ সুন্দর দেখাচ্ছিল। ভাবপ্রবণতায় অভিভূত হয়ে পড়লে বাস্তবকে ভুলে যেতে হয়। আসলে পাহাড়পর্বত পাথরের টিবি বৈত নয়। ইয়াকুব কিন্তু এরই মাঝে শুয়ে পড়েছিল। এরূপ পরিশ্রম সে কখনও করেনি তাই ঘুম তার চোখে লেগেই ছিল। আমরা আরও দুটো দিন বাইরে কাটিয়ে কাবুলের সন্নিকটে এলাম। আমার আনন্দ হছিল কাবুল দেখব বলে, আর ইয়াকুবের মুখ গলা শুকিয়ে কাঠ হয়ে উঠছিল কষ্টের সম্মুখীন হতে হবে বলে। ইয়াকুবের মুখ এবার সত্যিই মলিন দেখাচ্ছিল।