তাকে জিজ্ঞাসা করে জানলাম আর একটু এগিয়ে গেলেই ঘাঁটি পাওয়া যাবে। সেখানে তাকে বলতে হবে কেন সে কাবুল যাচ্ছে। সেই প্রশ্নের উত্তর খুঁজে সে পাচ্ছিল না। তাকে অভয় দিয়ে বললাম “তুমি বলবে, কাফেরটাকে অনুসরণ করে চলেছ এবং দেখছ সে এসলামের কোনও ক্ষতি করছে কি না।” যুবক যেন হাঁফ ছেড়ে বাঁচল।
কতক্ষণ যাবার পরই আমরা একটা ঘাঁটিতে পৌঁছলাম। ঘাঁটিতে কোন সেপাই ছিলনা, মুফতি পোশাক পরে একজন অফিসার বসেছিলেন। এসেই পাসপোর্টখানা তাঁর হাতে দেবার পর ইংগিতে তিনি আমাকে ঘাঁটি পার হবার আদেশ নিলেন। হন্ হন্ করে চলে গিয়ে একটু দূরে ইয়াকুবের অপেক্ষায় দাঁড়ালাম। এদিকে ইয়াকুব এসেই চোখ মুখ লাল করে কাস্টম অফিসারকে কি বললে এবং কাস্টম পার হয়ে চলে এল।
আমি তখনও দাঁড়িয়েছিলাম। সে আমাকে তদাবস্থায় রেখেই এগিয়ে চলে গেল, যেন আমার সংগে তার পরিচয় নেই। কতক্ষণ যাবার পর উভয়ে মিলিত হলাম। ইয়াকুব বললে, “আমার উপদেশে নাকি বেশ কাজ হয়েছে।”
আমরা সে দিন আর বেশি দূর না গিয়ে একটি সাবেকি ধরণের গৃহস্থের বাড়িতে অতিথি হলাম। গৃহস্থও আমাদের মামুলি ভাবেই গ্রহণ করলেন। রাত্রে খাবার জন্য আমরা প্রত্যেকে মাত্র দু’খানা করে রুটি খেতে পেয়েছিলাম। দারিদ্র গৃহস্থ একটু তরকারি দিতেও সক্ষম হন নি। আমি বারবার ইয়াকুবকে ইংগিতে বুঝিয়ে দিচ্ছিলাম, গৃহস্থ যেন কোন মতেই আমাদের অন্তরংগ ভাব বুঝতে না পারেন। ঘুমাবার সময়ও দু'জন দুদিকে ঘুমালাম, মাঝে শুল গৃহস্বামী। গৃহস্বামী আমাকে যা খেতে দিয়েছিলেন ইয়াকুব তার একটুও বেশি পায় নি। ইয়াকুব ইসলাম ধর্মের রক্ষকরূপে ঘরে প্রবেশ করেছিল এবং আমার নামে নানা রকম বদনাম করেছিল। কিন্তু গৃহস্থ উভয়কেই মুসাফির ভেবে সমান ব্যবহারই করেছিলেন।