প্রথম ঘাঁটি-টি হ’ল পূর্বকথিত দু নম্বর কাবুল। এ স্থানটার সম্বন্ধেই নানারূপ কাহিনী প্রচলিত আছে। এই স্থানটি সমতল এবং জলেরও বেশ সুবিধা আছে। শোনা যায় লড়াইএর সময় জল বিষাক্ত করে দেওয়া হ’ত; কিন্তু এখানে সে বন্দোবস্ত ছিল না। এজন্যই বোধহয় বৈদেশিক আক্রমণকারীরা পূর্বে এসব স্থানেই তাঁবু ফেলত। কিন্তু তাদের চোখের সামনে পর্বতমালাতে পাঠান সৈন্য লুকিয়ে থাকতে পারে, সেটাও তাদের জানা উচিত ছিল। হরিসিং লিলুয়া এবং রাজপুত সৈন্য যখন কাবুল আক্রমণ করেছিলেন তখন তারা এখানে তাঁবু ফেলে বিশ্রাম করেন নি। প্রত্যেকেই এই স্থানটিকে বাঁয়ে রেখে আরও উজানে গিয়ে, পেছন দিক হতে আসল কাবুল আক্রমণ করেছিলেন। কাবুলে যত আক্রমণকারী এসেছিলেন, তন্মধ্যে কারো নাম ইতিহাস ছাড়া আর কোথাও খুঁজে পাওয়া যায় না, কিন্তু হরিসিং লিলুয়ার নাম আজও শিশুদের ঘুম পাড়ানি গানের সংগে জড়িয়ে রয়েছে। হরিসিং লিলুয়া কখনও সমতল ভূমিতে বিশ্রামের ব্যবস্থা করে নিজেকে বিপন্ন করেন নি। তিনি নতুন নতুন দুর্গ গঠন করে তাতেই শিখ সেপাইদের থাকবার বন্দোবস্ত করেছিলেন। আজও সেই দুৰ্গমালা বর্তমান। বৃটিশও হরিসিং লিলুয়ার অনুকরণ করে কাবুলের কাছেই একটা দুৰ্গ তৈরি করেছিলেন, আজ সেই দুৰ্গ খালি পড়ে আছে, একখানা ঘরও তাতে নেই, শুধু চারদিকে দেওয়াল দেখতে পাওয়া যায়। আমি সেই পুরাতন দুর্গ দেখতে যাই নি। দুর্গ দুৰ্গ-ই, শাসিত এবং শাসকের মধ্যে একটি পর্দা মাত্র। যখনই শাসকের শক্তি ক্ষয় হয় তখন দুর্গের দেওয়ালই শুধু থাকে, ঘর সেখানে থাকে না।
সকালে উঠেই আবার আমরা পথে এলাম। পথ দুৰ্গম নয়। তবে উল্টা বাতাস বইছিল। উল্টা বাতাসে চলা ভয়ানক কষ্টকর। সেজন্য আমরা একটা ঘরের আড়ালে শুয়ে পড়লাম। ইয়াকুব আমার ঘুমে বাধা দেয় নি। সে আমার সংগে সংগে যেতে পছন্দ করছিল এবং কাবুলে যত দেরি করে পৌঁছতে পারি তারই