মুসাফিরখানার কথা জিজ্ঞাসা করে জানলাম, এখানে পৃথক কোন ধর্মশালা নাই। পূজারী মন্দির-সংলগ্ন একটা ঘর আঙুল দিয়ে দেখিয়ে বললেন, অতিথি এলে ঐ ঘরটাতেই যায়গা করে দেওয়া হয়। সারাদিন সাইকেল চালিয়ে বড়ই দুর্বল হয়ে পড়েছিলাম, নতুন করে আস্তানা যোগাড় করার আর উৎসাহ মোটেই ছিল না। কাজেই পূজারীর প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করলাম না।
পূজারী আমাকে দাড় করিয়ে রেখেই ঘরে চলে গেলেন। আমি বারান্দায় দাড়িয়ে ঘরের গড়ন, মন্দিরের নির্মাণ-কৌশল এসব ভাল করে দেখতে লাগলাম। কিছুক্ষণ পর পূজারী ফিরে এসে আমাকে ঘরের ভেতরে নিয়ে গেলেন। ঘরের মধ্যে প্রজ্বলিত সন্দল ছিল, তারই পাশে বিশ্রাম করতে বসলাম। আমাকে ঘরের ভেতর বসিয়ে রেখে পূজারী আবার চলে গেলেন।
মন্দিরে তিন খান মেটে ঘর। একটি উত্তরে, অপর দুটি পূর্ব এবং পশ্চিম দিকে অবস্থিত। প্রত্যেক ঘরের বারান্দার সংগেই পরস্পরের যোগাযোগ রয়েছে। শীতের দেশের ঘরগুলি এরূপ করেই তৈরী হয়ে থাকে। কালী-মন্দির উত্তরদিকে অবস্থিত। পূর্বদিকের ঘরে রান্না করা হয় এবং পশ্চিম দিকের ঘর অতিথির জন্য। ঠাকুর রান্নাঘরেই শোন বলে মনে হল। সন্দলের কাছে বেশীক্ষণ বসে থাকতে ভাল লাগল না, পাশেই একটা বড় বালিশ ছিল, তাতেই হেলান দিয়ে শুয়ে পড়লাম। কতক্ষণ শুয়েছিলাম জানি না, যখন ঘুম ভাঙল তখন দেখলাম পূজায়ী আমার ভোজনের বন্দোবস্ত করছেন। ভেবেছিলাম, তিনি হয়তো আমাকে বিছানার বাইরে বসে খেতে বলবেন, কিন্তু তা তিনি বলেন নি। বিছানার ওপরে বসেই খেয়ে নিলাম। আফগানিস্থানে এঁটোর বালাই নেই। যত এঁটোর বালাই শুধু ভারতেই। পৃথিবীর আর কোথাও এঁটো বলে কিছু নেই। আমাদের দেশের জ্ঞানীগণ বলেন, এঁটো মেনে চলা ভাল, তাতে নাকি খাস্থ্য ভাল থাকে। কিন্তু আমাদের দেশের লোকের অজ্ঞতা দারিদ্র এবং সর্বোপরি সরকারের ঔদাসীন্যের ফলে তারা নানা ভাবে স্বাস্থ্য হারাচ্ছে। তাদের