পাতা:আফগানিস্থান ভ্রমণ.djvu/৭৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৭০
আফগানিস্থান ভ্রমণ

 চায়ের দোকান হতে বেরিয়ে আসার পর শুনলাম দুজন লোক হো হো করে হাসছে। যাকগে, বিদ্রূপের হাসি হাসল তো বয়েই গেল। এখন একবার বৈদেশিক সচিবের সংগে সাক্ষাত হলে ভাল হয়, মনে করে তাঁরই বাড়ির দিকে অগ্রসর হলাম। অলিগিলি পথ ধরে চলে যখন বেশ ঠাণ্ডা অনুভব করছিলাম, তখন ভাবলাম এখন আর বৈদেশিক সচিবের বাড়িতে যাবার দরকার নেই। চায়ের দোকানে গিয়ে আর এক পেয়ালা চা খেয়ে পুরোহিত মশায়ের আশ্রয়ে গিয়ে বিশ্রাম করাই উচিৎ। এই ভেবে চায়ের দোকানের দিকে চললাম।

 কিন্তু চায়ের দোকানের পথটার কোন হদিসই পেলাম না। অবশেষে পথচারীদের জিজ্ঞাসা করে কাবুল হোটেলে এলাম। কাবুল হোটেল পূর্বোক্ত চায়ের দোকানের কাছেই। দ্বিতীয় বার আমাকে চায়ের দোকানে ফিরে আসতে দেখে ছদ্মবেশী বয় একটু থাতমত খেয়ে গেল। ইংলিশ ভাষাতে বললাম “চা খেতে আমার বড়ই ভাল লাগে। এখানে আপনারাই সব চেয়ে সেরা চা প্রস্তুত করেন। আমাকে এখানে বারবার আসতেই হবে। আর এক কাপ চা দিন দয়া করে।” বয় চা নিয়ে এল। চা পান করে মন্দিরে ফিরে এলাম। পথে বার বার শুধু মনে পড়তে লাগল সেই কথাটি— “এক সঙ্গে দিলেই হবে।”

 এখানে আমার পোশাক সম্বন্ধে কিছু বলা দরকার। তখনও শীত আরম্ভ হয় নি। হাপ পেণ্ট পরিত্যাগ করে ব্রীচেস পরতে আরম্ভ করেছিলাম। ব্রীচেসের নীচে ছিল একটা গরম পাজামা। এতে শীত নিবারণ হ’ত বেশ ভাল করেই। শরীরে ছিল একটা সার্ট। তার উপর দুটি গরম গেঞ্জী। তার উপর আর একটা সার্ট। যখন বাইরে যেতাম তখন এর উপরে থাকত একটা গরম কোট। মাখায় থাকত সোলার হেট। এতেই অনুভব হবে শীত থেকে রক্ষা পাবার জন্য কিরূপ ব্যগ্র ছিলাম।