মন্দিরে ফিরে এসে দেখলাম পূজারী আমার জন্যও রান্না করেছেন। কিন্তু তাঁর মনে সন্দেহের ঝড় উঠছে। সেই ঝড় কোন্ দিকে বইবে তা তিনিই জানেন। যাহোক্, আমি হাত মুখ ধুয়ে খেতে বসলাম। রান্না হয়েছিল খিচুড়ি। খিচুড়িতে প্রচুর ঘি দেওয়া হয়েছিল। এদেশে ঘি, দরিদ্র লোকের ভাগ্যে জুটে না। ঘি খান ধনীর দল। বিষ্ণু মন্দিরের পূজারীও একজন ধনী লোক। তাঁর বাড়িতেও সবসময় বস্তা বস্তা চাউল, চিনি এবং টিন ভর্তি ঘি মজুত থাকে।
পূজারী ঠাকুর ভোজনের পূর্বে মন্ত্র উচ্চারণ করলেন, তারপর ধীরে ধীরে আঙুলের সাহায্যে খেতে আরম্ভ করলেন। অন্যান্যেরাও সেরূপ ভাবে খেতে আরম্ভ করল। শুধু আমি চামচের সাহায্যে খাওয়া সুরু করলাম। খাওয়া শেষ হয়ে গেলে পূজারী প্রত্যেকের থালা পরীক্ষা করে দেখলেন, খাদ্যের এক কণাও কারো থালাতে লেগে আছে কি না? পরিদর্শন হয়ে গেলে তিনি ভৃত্যকে থালাগুলি নিয়ে যেতে বললেন। চা তৈরীই ছিল। ভাত খাওয়ার পর চা খাওয়া হল। আহারাদির পালা শেষ হলে নাক ডাকিয়ে সবাই ঘুমিয়ে পড়লাম।
বিকাল বেলা স্থানীয় হিন্দু প্রতিনিধি বলে কথিত একজন প্রৌঢ় ব্যক্তি আমার সংগে দেখা করতে এলেন। মুখ দেখেই লোকটিকে খল প্রকৃতির মনে হল। কায়দামাফিক নমস্কারের আদান-প্রদান সারা হলে প্রৌঢ় বললেন “আপনি আমাদের সম্মানিত অতিথি, কিন্তু বড়ই দুঃখের সহিত একটি কথা বলতে হচ্ছে—আপনি কথাগুলি মন দিয়ে শুনুন। এখানকার নিয়মমতে, যে-কোন ভারতবাসী এদেশে আসুক, কাবুলে পৌঁছাবার পরই তাদের প্রত্যেকেরই আমার কাছে রিপোর্ট করতে হয়, আপনি তা করেন নি। আমার এখন কর্তব্য হল, আপনাকে পুলিশ অফিসারের কাছে হাজির করা। তাঁর আদেশ অনুসারে প্রত্যেক কুড়ি দিন অন্তর আপনাকে পুলিশ স্টেশনে গিয়ে অথবা আমার কাছে এসে আপনি কি ভাবে জীবন কাটাচ্ছেন তার রিপোর্ট দিতে হবে। এ কথাটা পুলিশ অফিসারের