পাতা:আফগানিস্থান ভ্রমণ.djvu/৮১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৭২
আফগানিস্থান ভ্রমণ

সামনেই আপনাকে বুঝিয়ে দেওয়া আমার কর্তব্য। আমি দোভাষীরও কাজ করি। আপনি কাবুলে আসার পর আমার কাছেও যান নি, কোন পুলিশ অফিসারের কাছেও যাননি; সেজন্য হয়তো আপনাকে কষ্ট পেতে হবে। উপয়ন্তু আপনি আফগানিস্থানে পৌঁছেই পল্টনি অফিসার, ছাত্র এবং জনসাধারণের সংগে অবাধে মেলামেশা করছেন। এসব আফগান সরকারের মনঃপূত হবে কিনা জানি না। যা হোক আপনাকে কাল আমার সংগে পুলিশ স্টেশনে যেতে হবে।”

 প্রৌঢ় যদিও আফগানিস্থানেরই বাসিন্দা এবং কোনও উপজাতিরই লোক নহেন, তবুও তাঁর কথায় গোলামী ভাবের বেশ একটা ছাপ ছিল। এত কষ্ট করে একটা স্বাধীন দেশে এসেছি, এখানেও দেখছি গোলামির প্রভাব। কিন্তু আমি পাঠান ছেলেদের সংগে থেকে মনের ভাব অনেকটা পরিবর্তন করেছিলাম। বললাম “মশাই, এসব আইন কানুনের ধার ধারি না, কাল সকালে যদি আমাকে পুলিশ স্টেশনে যেতে হয় তবে আপনি টমটম (এক-ঘোড়ার গাড়ি) নিয়ে আসবেন। নতুবা যাব না। আপনার শক্তি অনুযায়ী যা ইচ্ছা তা করতে পারেন।”

 প্রৌঢ় একটু কুপিত হয়ে বললেন “আপনার মত অনেক লোক দেখেছি সাহেব। এইতো তিন চার বৎসর পূর্বে পাঞ্জাব হতে কতকগুলি মুসলমান ছাত্র এসেছিলেন। তারা গোঁ ধরে বললেন, আমার সংগে সাক্ষাৎ করবেন না। মুসলমান অফিসার ছাড়া আর কারো সংগে কথা বলবেন না। কিন্তু তাঁরা জানতেন না এদেশে ধর্মের হিসাবে কর্মচারী নিয়োগ হয় না। রাষ্টগত ব্যাপারে সাম্প্রদায়িক কোন প্রশ্নই ওঠে না। আমি এখানে ভারতবর্ষের লোকজনের তদ‍্বির করি, সে যে-কোন ধর্মের লোকই হোক। কিন্তু তাঁরা তা চান নি। তাঁরা চেয়েছিলেন আমার স্থলে একজন মুসলমান নিযুক্ত হোক। আমি হলাম তিন যুগের ভুষণ্ডী কাক। আমান উল্লা, বাচ্চ-ই-সাক্কো, নাদির শা এই তিন জনকেই আমি দেখেছি। বর্তমান রাজা জাহির শা আমাকে নতুন নিয়োগপত্র দিয়েছেন। এর