তবে আমার প্রাণরক্ষকদের কোন ক্ষতি হবে না। তারপর এটাও মনে রাখতে হবে, যা’ বলতে যাচ্ছি তা চায়ের দোকানের গল্প।
মানুষ মানুষে ভেদ ঘুচিয়ে দেবার জন্য যিশু ক্রুশবিদ্ধ হলেন, বুদ্ধ এত ত্যাগ স্বীকার করলেন, নানক সকল ধর্ম মিলিয়ে নতুন ধর্ম তৈরী করলেন, কিন্তু মানুষ সমান স্তরে এল না। মানুষের মধ্যে ছোটজাত বড়জাত রয়ে গেল, ছোটলোক বড়লোকের তারতম্য রয়ে গেল। বাচ্চা-ই-সাক্কো ছোট জাত। তঁর অভু্যদয়ের দরকার ছিল। যখন দেখা গেল বাচ্চা-ই-সাক্কো হবিব উল্লা হয়ে আর্থিক জগতে পুজিবাদী এবং উঁচুজাতের উপর টেক্কা দিয়েছে তখনই আবার উঁচুজাতের মাথা ঘুলিয়ে গেল, নাদির সাহের দরকার হল।
বাচ্চা-ই-সাক্কো মাত্র আট মাস রাজত্ব করেছিলেন। তাঁর রাজত্ব-সময়ে আফগানিস্থানের কি অবস্থা ছিল সেই সম্বন্ধে কেউ কিছু বলেন নি। আমি পর্যটক মাত্র। ঐতিহাসিক জ্ঞান অর্জন করবার জন্য সে দেশে যাই নি। সে দেশের লোকও বাচ্চা-ই-সাক্কোর সম্বন্ধে তখন অনেকটা নীরব হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু গোপনে যারা বাচ্চা-ই-সাক্কোর সম্বন্ধে কথা বলত তাদের কথা শুনতে আমার বেশ ভাল লাগত। যারা আমার প্রাণ বঁচিয়েছিল, বাচ্চা-ই-সাক্কো এদেরই সমশ্রেণীর লোক। কুহীস্থান নামক যায়গা হতে এরা কাবুলে এসে বসবাস করছে। কুহীস্থানই বাচ্চা-ই-সাক্কোর জন্মস্থান। বাচ্চা-ই-সাক্কো হিলজাই সম্প্রদায়ের লোক।
কাংড়া জেলা নিবাসী চেলারাম গত মহাযুদ্ধের চাকুরি শেষ করে, তৃতীয় আফগান যুদ্ধে যোগদান করেছিলেন। আফগান যুদ্ধ শেষ হলে তাঁকে চাকরি ছাড়িয়ে দেওয়া হয়। তিনি বাড়িতে ফিরে আসেন। বাড়িতে এসে বেশি দিন নিশ্চিন্ত মনে থাকতে পারেন নি। আফগানিস্থানে চাকরির অন্বেষণে যান। আফগানিস্থানে যাবার পর তাঁর মতিগতি ভাল ছিল না। কোনও কারণবশত তাঁকে জেলে যেতে হয়। তখন আমান উল্লার রাজত্ব কাল বলেই চেলারাম,