পাতা:আফগানিস্থান ভ্রমণ.djvu/৯৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
আফগানিস্থান ভ্রমণ
৮৫

বিকালাঙ্গ না হয়েই জেলে গিয়েছিলেন। আজও আফগানিস্থানে চোরের হাত কেটে ফেলা হয়।

 আমান উল্লা সমাজ-সংস্কারে মন দিয়েছিলেন। জেল-সংস্কার করবার তাঁর ফুরসত হয় নি। তখন জেলে গেলে কয়েদীদের বাইরে থেকে খাদ্য সংগ্রহ করে আনতে হত। এখনও বোধ হয় সেই নিয়মই আছে তবে গত কয়েক বৎসরের সংবাদ আমি সঠিক জানি না। চেলারামও বাইরে থেকেই খাবার সংগ্রহ করতেন। একদিকে জেলের খাটুনি তারপর খাদ্য সংগ্রহ করে আনা ভয়ানক পরিশ্রমের কাজ। বেশি পরিশ্রম করলে সুনিদ্রা হয়। একদিন সকালবেলা চেলারাম যখন নাক ডাকিয়ে ঘুমাচ্ছিলেন, তখন তাঁর মাথার টিকি দেখে, তিনি যে হিন্দু সকলেই বুঝতে পেরেছিল। হিন্দুরা খুব কমই জেলে যায়। সেজন্যই বোধহয় হিন্দুদের জেলে দেখলে অন্যান্য কয়েদীরা সকলে মিলে তাদের উপর অনর্থক অত্যাচার করে। চেলারামকেও অনর্থক নাজেহাল করার জন্য অন্যান্য কয়েদীরা একজোট হল। চেলারাম বুঝলেন এবার তাঁর প্রাণান্ত হবে। যখন তাঁর উপর সত্যই অত্যাচার শুরু হল তখন কাছে দণ্ডায়মান এক গভীর প্রকৃতির লোকের পায়ে ধরে চেলারাম প্রাণভিক্ষা চাইলেন। সেই লোকটিই বাচ্চ-ই-সাক্কো। যার কথায় এতগুলি লোক এক জন হিন্দু কয়েদীকে হত্যা করল না তাঁর নিশ্চয়ই বিশেষত্ব ছিল। এখানে বিশেষত্ব শব্দ ব্যবহার করেছি নানা কারণে; ভারতের হিন্দু এক দিন বুঝতে পারবে এই বিশেষত্ব কি চিজ্।

 চেলারামের মনের পরিবর্তন হয়ে গেল। চেলারাম বুঝলেন টাকাই পরমার্থ নয়। তারপর বিদ্রোহ হল। বিদ্রোহে বাচ্চা-ই-সাকো কৃতকার্য হয়ে হবিবুল্লা নাম নিলেন। কিন্তু তাঁরও মতিগতি বদলে গেল। চেলারাম ধর্মের গোঁড়ামি আফগানিস্থান হতে নিমূল করতে বন্ধপরিকর হলেন। বাচ্চা-ই-সাক্কো ছোটজাত বড়জাত এ দুটা কথা পৃথিবী হতে লোপ করতে উদ্যোগী হয়ে দেখলেন, এ যাবার নয়, যে পর্যন্ত রুশ দেশের দৃষ্টান্ত অনুসরণ করা না যায়। চেলারাম এবং