পাতা:আফগানিস্থান ভ্রমণ.djvu/৯৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৯০
আফগানিস্থান ভ্রমণ

অসদভিপ্রায় ছিলনা। কাবুলের মত স্থানে একটি বাঙালী নারীর দর্শন পেয়ে তার সম্বন্ধে জানবার কৌতুহল হয়েছিল। কোনরূপ চিন্তা না করেই তাঁর কথায় সম্মত হলাম। তিমি আগে চললেন, আমি তাঁর অনুসরণ করলাম। তিনটি সরু গলি ঘুরে আমরা একটি বাড়ীর সামনে এলাম। কড়া নাড়তেই দরজা খুলে গেল। একটি বার তের বৎসরের মেয়ে ও একটি আট বৎসরের ছেলে বের হয়ে এল। তাদের মায়ের সংগে একজন অপরিচিত লোককে দেখে তারা বিস্মিত হল। তাদের মা তাদের ডেকে কি যেন বল্লেন। তখন তারা একটু ভয়ে ভয়ে সংগে চলল।

 উপরে উঠে গিয়ে দেখলাম, একজন পাঠান বসে আছেন। আমাকে দেখতে পেয়ে তিনি সুখী হয়েছেন বলে মনে হল না। যা’ হোক তিনি ভদ্রতা প্রকাশ করতে কসুর করেন নি। “স্তাৱেমাসে” বলে সম্ভাষণ করলেন। উত্তরে আমি নমস্কার বলাতে তিনি কিছু বিস্মিত হলেন। তারপর তিনি হিন্দুস্থানীতে কথা বলতে আরম্ভ করলেন। আমি ও হিন্দুস্থানীতে তাঁর কথার জবাব দিলাম। আমার পরিচয় পেয়ে এবং আমি যে একজন “সাইয়া দুনিয়া” শুনে তাঁর মুখের ভাব বদলে গেল। তিনি তাড়াতাড়ি আমাকে একটি নতুন টি-পট, এক ঘটি গরম জল এবং কতকগুলি চায়ের পাতা সামনে এনে দিয়ে চা বানিয়ে খেতে বললেন। হেসে বললাল “নতুন টি পটের কোন দরকার ছিল না। আমি হিন্দুকুলে জন্মেছি বটে, তা বলে হিন্দুদের সনাতন আচার বিচার মানতে কোন মতেই রাজি নই। ছুতমার্গ আমার ত্রিসীমানায় নেই।” আমার কথা শুনে সরলচিত্ত পাঠান অত্যন্ত খুশী হলেন এবং তৎক্ষণাৎ দাঁড়িয়ে আমার করমর্দন করলেন। বাঙালীরা দুধ ছাড়া চা খায় না, সে জন্য তিনি তাঁর স্ত্রীকে দুধ আনতে পাঠিয়ে ছিলেন। কথায় কথায় বললেন, মেওয়া বিক্রি করবার জন্যে বহুকাল যাবৎ প্রত্যেক বৎসরই বাঙলাদেশে যাওয়া তাঁর অভ্যাস। আঠার বৎসর পূর্বে তিনি লক্ষ্মীকে কলকাতায় বিয়ে করেছিলেন। লক্ষ্মী বাঙালীর মেয়ে, তিনি লক্ষ্মীকে