পাতা:আমার আত্মকথা - বারীন্দ্রকুমার ঘোষ.pdf/১৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
আমার আত্মকথা

নিজের আধারে নামাবার একরকম কাঁচা ও নিরেট কৌশল। এর পাকা ও উত্তম উপায়টি জানে যোগীরা যারা শান্ত হয়ে পিছনের সেই পরম সত্যের সঙ্গে এক হয়ে truer harmony of life জীবনের প্রকৃত ছন্দে পৌঁছেছে! আমাদের মা বাপ বা অতিবড় আত্মজনের অভিশাপ বা আশীর্ব্বাদ যে কখন কখন আশ্চর্য্য রকম ফলে যায় তার কারণই ঐ পিছনের শক্তি; সেই শক্তিকে হৃদয়ের প্রবল ভাবের জোরে তাঁরা টেনে আধারে নামান এবং হাতের অস্ত্রের মত প্রয়োগ করেন,—কখন কল্যাণ কামনায়, কখন অকল্যাণ কামনায়। অসি নিয়ে আমরা যেমন আর্ত্তত্রাণও করি আবার নরহত্যাও করি।

 আমার অর্থ হোক, সন্তানের রোগ সারুক, অমুক কাজটা উদ্ধার হোক এই যে সব বিচিত্র কামনা আমাদের মনে ও প্রাণে নিরন্তর আসছে ও যাচ্ছে, সাংসারিক জীবন এইতেই চলেছে। খুব নিরেট অসম্পূর্ণ উপায় হলেও বাসনাই মানুষের আপাততঃ জীবন চালাবার একমাত্র উপায়, where there is a will there is a way,—সংকল্প মনে ও প্রাণে দানা বাঁধলেই উপায় একটা না একটা আপনিই আসে। চাইবার ব্যাকুলতা, অধীরতা, ছটফটানী যেমন শক্তিকে কেন্দ্রীভূত করে তার জোরে কামনার পিছনের ইচ্ছাশক্তিটিকে অনেকখানি ব্যাহত করে, বিক্ষিপ্ত করে, লক্ষ্যভ্রষ্ট করে, নইলে শান্ত ভাবে চাইতে জানলে মানুষের ইচ্ছাশক্তি হ’তো অমোঘ সর্ব্বার্থসাধিকা। শ্রীঅরবিন্দ যে মানব আধারে দেবজীবনের কথা বলেন তার মূল কথাই

১২