পাতা:আমার আত্মকথা - বারীন্দ্রকুমার ঘোষ.pdf/১৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
আমার আত্মকথা

এই ইচ্ছাশক্তির বিশুদ্ধ, শান্ত ও বিরাট রূপ এবং তার অমোঘ প্রয়োগ। মান প্রাণ বিশুদ্ধ ও শান্ত হয়ে যতই ঊর্দ্ধের বৃহৎ সত্তার সঙ্গে tuned হয় ততই তারা হয় অভ্রান্ত ও অব্যর্থ, ততই পিছনের দেবসত্তা—(মানুষ যার ছায়া) জীবনের হয় কর্ণধার। এ সম্বন্ধে বিস্তৃত করে লেখবার ইচ্ছা রইল সাধন জীবনের ইতিহাসে, সামর্থ্যে ও পরমায়ুতে ও অবসরে যদি কুলোয় তা’ হলে একদিন এ ইচ্ছাটিও পূর্ণ হবে।

 যাই হোক, ঠাকুরমার অভিশাপ ফললো। বাবা গেলেন নিজের কর্ম্মস্থলে, কাকা গেলেন ভাগলপুরে কমিশনারের হেড ক্লার্ক হয়ে। জীবনের শেষ অবধি তিনি ভাগলপুরেই ছিলেন। তাঁর অনেকগুলি মেয়ে, তাঁদের সন্ধান আমি—গৃহহারা লক্ষ্মীছাড়া সংসারসম্পর্কহীন আমি এক রকম রাখিনে, একথা বলাই বাহুল্য।

 বাবা প্রথমে ছিলেন রংপুরের এসিষ্টাণ্ট সার্জ্জন। যে বছর কেশব সেন, বি দে প্রভৃতি বড় বড় একদল বাঙালী জাহাজে চড়ে বিলেতে যান সেই বছর তাঁদের সঙ্গে গেছিলেন এই রংপুরের ডাক্তারটি, এবাডিনের য়ুনিভারসিটিতে তিনি এম্ ডি পাশ করে হয়ে এলেন পুরোদস্তুর সিভিল সার্জ্জন। বাবার এই প্রথম বিলাত যাত্রার সময় তাঁর দুই সন্তান মাত্র হয়েছে—দাদা ও মেজদা, এই দুই ছেলে ও মাকে নিজের বন্ধু মিস্ পিগটের কাছে রেখে তাঁর এই নীল সমুদ্রে ভাগ্যান্বেষণে প্রথম পাড়ি জমানো। পুরো মাত্রায় সাহেব ডাক্তার হয়ে ফিরে এসে কিছু দিন তিনি ভাগলপুরের সিভিল সার্জ্জন হন, তার পরে আসেন রংপুরে।

১৩