পাতা:আমার আত্মকথা - বারীন্দ্রকুমার ঘোষ.pdf/১৭০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
আমার আত্মকথা

আমার বন্ধুটিকে সব ব্যাপার খুলে বলায় সে নিজের পকেট খরচ থেকে জমিয়ে ৯০৲ টাকা আমায় দিল। তখন তার বাপ মা অভিভাবক রূপে বেঁচে বর্ত্তে আছেন, এর বেশী সে করে কোথা থেকে? এই নব্বই টাকায় আরও কিছুদিন ঠেকনো দিয়ে ব্যবসার পড়ো পড়ো চালাখানা খাড়া রাখা গেল, তার পর the deluge—জল প্লাবন অর্থাৎ কিনা ‘পপাত চ মমার চ’।

 মায়ের সঙ্গে পরামর্শ করে আমি স্থির করলুম যে, বরোদায় সেজদা’ শ্রীঅরবিন্দের কাছে গিয়ে কিছু মূলধনের চেষ্টা করবো। মা তাঁর চাকরটিকে নিয়ে আপাতত ভাঙ্গা সংসার আগলে থাকবেন—যতদিন না আমি ফিরে আসি, তারপর না হয় বাণিজ্যের বাসীন্দা লক্ষ্মী ঠাকরুণকে ছেড়ে আবার কৃষির সুখস্বপ্নে ডুব মারা যাবে। আমার দোকানের কাছেই একজন চাপ-দাড়ি ব্রাহ্মের প্রকাণ্ড মনোহারী দোকান ছিল, জিনিসের ফর্দ্দ করে সেই পাল মশাইকে রাতারাতি মাল পৌঁছে দিয়ে, আমি মায়ের সঙ্গে তাদের টাকা পাবার ব্যবস্থা করে দিলুম, স্থির হ’লো মাল বেচে হোক রেখে হোক তাঁরা মাকে প্রাপ্য টাকা দেবেন। পরের দিন ভোরের ট্রেণে আমিও বাঁকিপুর ত্যাগ করলুম আর বি ঘোষের ষ্টলের চটকদার সাইনবোর্ড খানি হঠাৎ গেল উবে। এ দোকান যে রাত পোহালেই শিঙে ফুঁকবে এ সংবাদ তখনও বাঁকিপুরে কেউই জানতো না—বাদ আমার সেই শ্যামবণ দীর্ঘচ্ছন্দ শান্তমুখশ্রী বন্ধুটি। চায়ের

১৬০