পাতা:আমার আত্মকথা - বারীন্দ্রকুমার ঘোষ.pdf/২২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
আমার আত্মকথা

দিত জল আর মা করতেন রান্না। শেষের দিকে টাকা আসতো দাদাবাবু রাজনারায়ণ বসুর হাতে, কারণ আমরা দেখতাম বাঁকে করে করে লোকে মাস কাবারের বাজার দাদাবাবুর বাড়ী থেকে নিয়ে মায়ের কাছে দিয়ে যেত।

 বাবার স্বভাব ছিল বেহিসেবী খরচে, টাকা তাঁর হাতে ভোজবাজীর সৃষ্ট জিনিসের মত দেখতে না দেখতে উড়ে যেত। দয়ার বশে যে নারীর অধিক অসহায় ও দুর্ব্বল, বন্ধুর জন্যে যে এক কথায় সর্ব্বস্ব দিয়ে দিতে পারে, পরিচিত অপরিচিতের যে মানুষ স্বভাবতঃ পরমাশ্রয়, সে মানুষ অমিতব্যয়ী হলে যা হয় এক্ষেত্রেও তাই হয়েছিল। ছেলে তিনটিকে বিলাতে শিক্ষার জন্যে রেখে এসে বাবা কিছু দিন নিয়মিত টাকা পাঠালেন, তার পর সেদিকেও বিশৃঙ্খলা এল। এই রকম মানুষ দুনিয়ায় অনেক আছে যারা দুঃস্থের জন্যে দানসত্র খুলে বসে আছে, আর তার নিজের পরমাত্মীয় উপবাসে মরছে!

 তিন দাদা প্রথমে পাঁচ বছর ম্যাঞ্চেস্টারের গ্রামার স্কুলে পড়লেন,তারপর দু’ এক বছর ড্রুইডের মায়ের কাছে লগুনে এসে রইলেন। কোন অভিভাবকের অধীনে থাকা এই তাঁদের শেষ। তিন জনে সেণ্ট পলস্ স্কুলে পড়ছিলেন, সেখান থেকে ৪০ পাউণ্ড স্কলার্শিপ পেয়ে অরবিন্দ গেলেন (খুব সম্ভবতঃ) কিংস কলেজ কেম্ব্রিজে ও মেজদা’ মনোমোহন গেলেন ক্রাইষ্ট চার্চ্চ কলেজ অক্সফোর্ডে। বাবা এ সময়ে টাকা পাঠাতেন

১৮