পাতা:আমার আত্মকথা - বারীন্দ্রকুমার ঘোষ.pdf/২৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
আমার আত্মকথা

হর্ম্মের মহা অরণ্য কলকেতা! কিন্তু তার আগে বলি আমাকে রুক্মিণী-হরণ করে নিয়ে যাবার কথাটা।

 কিন্তু আমায় রুক্মিণী-হরণ করে নিয়ে যাবার কথা বলবার আগে শৈশবের আরও যে অনেক কিছু এখনও বলা হয় নি। বাল্যকালের সেই পাগলী মায়ের কড়া শাসনে রোহিণীর জীবন সে এক অপূর্ব্ব অভূতপূর্ব্ব কাণ্ড। আমার জীবনে যা কিছু ঘটেছে তা’ প্রায়ই এমনই অভিনব, যে, আর কারু কখনও সে রকমটি হয়নি। রোহিণীর বাড়ীখানি বাংলো প্যাটার্ণের, পূব ও পশ্চিম বারাণ্ডা, দুইখানি বড় পাশাপাশি হল ঘর, পূবের বারাণ্ডার খানিকটা ঘুরে দক্ষিণেও গেছে। উত্তরে একখানা পূব পশ্চিমে লম্বা ফালি ঘর, তিন ভাগে ভাগ করা, তার পূর্ব্ব ও উত্তর কোণে বাথ রুম ও ল্যাভেটরী। দক্ষিণের বারাণ্ডাটুকুর কোণেও একটা বাথ রুম ও আর একটা ছোট ঘর। বাড়ীখানি প্রকাণ্ড কম্পাউণ্ডের মধ্যে, তার পূব দিকে কলমের আমের বাগান, উত্তরে সবজীবাগান ও কূয়া, দক্ষিণে ফুল বাগান, পশ্চিমে নানান গাছের সঙ্গে একটি পিচ গাছ। মায়ের কড়া পাহারায় আমরা বাড়ী থেকে পঞ্চদশ হাতের পরিধির বাইরে যেতে পারতাম না। মা আমাদের বাইরে পূবের বারাণ্ডায় বার করে দিয়ে ঘরে দুয়ার দিয়ে আপন মনে বিড় বিড় করতেন আর আমরা দুই ভাই বোনে ভয়ে আশঙ্কায় ও বাল্যের সহজ স্বতঃস্ফূর্ত আনন্দে খেলা করতাম। মা মাঝে মাঝে ভিতর থেকে হাঁকতেন “এই সরি” “এই রেরে” “আছিস তো?” আমরা

২৪