পাতা:আমার আত্মকথা - বারীন্দ্রকুমার ঘোষ.pdf/৭৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
আমার আত্মকথা

রয়েছেন, ধরতে গেলেই মিলিয়ে গেলেন।” সেই যে রাঙা মা কাঁদতে বসলেন বেলা দশটা অবধি তা’ থামলো না।

 আমি বাইরের ঘরে খেলা করছি। তখন বোধ হয় বেলা এগারটা কি বারটা। কয়েকজন সাহেব এসে বাড়ী ঢুকলেন, একজন আমার পরিচয় জিজ্ঞাসা করে বললেন, “তোমার মা কোথায়?”

 আ। ভেতরে আছেন।

 সা। তোমার বাবা ডক্টর কে ডি ঘোষ? খুলনার সিভিল সার্জ্জন?

 আ। হ্যাঁ।

 সা। তাঁর সম্প্রতি কোন অসুখ হয়েছিল?

 আ। কৈ, না।

 সা। তিনি মারা গেছেন, তোমার মাকে খবর দিতে পার?

 খবরটা শুনে আমার ভিতরে কোন দুঃখেরই সাড়া পেলুম না, শিশু ও বালকের চিত্ত তরল, স্নেহ ভালবাসাও নিম্নগামী, সচরাচর বড়র দিক থেকে ছোটর দিকে নামে। আমি মাকে খবর দিতে নারাজ হওয়ায় সাহেব ক’জন মুখ চাওয়া চাওয়ি করতে লাগলেন। ইনি বলেন, ‘তুমি বল’, উনি বলেন, ‘না বাপু তুমি বল, আমি পারবো না।’ শেষটা আমাকে দিয়ে মাকে ডাকিয়ে একজন জিজ্ঞেস করলেন, ‘আপনার স্বামী ডক্টর কে ডি ঘোষ?’ মা পরদার আড়ালে দাঁড়িয়ে থর থর করে

৭০