পাতা:আমার কথা (প্রথম খণ্ড) - বিনোদিনী দাসী.pdf/৭০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৪০
আমার কথা!

বাতাস করিতে লাগিলেন। কিন্তু এমন দুদৈব যে সমস্ত গাড়ীখানার ভিতর একটী লোকের কাছে, এমন কি এক গণ্ডুষ জল ছিল না, যে সেই আসন্ন-মৃত্যুমুখে পতিত লোকটীর তৃষ্ণার জন্য তাহা দেয়। “ভুনি” তখন সবে মাত্র বেঙ্গল থিয়েটারে কার্য্যে নিযুক্ত হইয়াছে। তাহার কোলে ছোট মেয়ে। সে সময় অন্য কোনও উপায় না দেখিয়া আপনার স্তন্য দুগ্ধ একটী ঝিনুকে করিয়া লইয়া উমিচাঁদের মুখে দিল। কিন্তু তাহার প্রাণ তৎক্ষণাৎ বাহির হইয়া গেল। বোধহয় ১০৷১৫ মিনিটের মধ্যে এই দুর্ঘটনা ঘটিল। গাড়ী শুদ্ধ লোক একবারে ভয়ে ভাবনায় মুহ্যমান হইয়া পড়িল। ছোটবাবু মহাশয় উমিচাঁদের বুকে মুখ রাখিয়া বালকের ন্যায় কাঁদিয়া উঠিলেন। আমি একে বালিকা, তাহাতে ওরকম মৃত্যু কখন দেখি নাই, ভয়ে মাতার কোলের উপর শুইয়া পড়িলাম। উমিচাঁদবাবুর মৃত্যুকালীন সেই মুখভঙ্গী আমার মনোক্ষেত্রে পুনঃ পুনঃ অভিনীত হইতে লাগিল। আমার। অবস্থা দেখিয়া চারুবাবু মহাশয় ছোটবাবুকে বলিলেন, “শরৎ থাম, যাহা হইবার হইয়াছে। এখন যদি রেলের লোক এ ঘটনা জানিতে পারে, গাড়ী কাটিয়া দিবে, এত লোকজন লইয়া রাস্তার মাঝে আর এক বিপদ হইবে।” ছোটবাবু কঁদিতে কাঁদিতে বলিলেন, “আমি উমির মা’কে গিয়া কি বলিব? সে আসিবার কালীন উমিচাঁদ সম্বন্ধে