পাতা:আমার জীবন.djvu/২৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

আমার জীবন S. প্রকার তুর্ভাবনা উপস্থিত হইল, তাহ আমি বুঝিতে পারিলাম না । মন আমার কিছুতেই স্থির হইল না। তখন আমি বলিলাম, পিসি ! আমি কেমন করিয়া পদ্মলোচন রায়ের কন্যা হইলাম । তখন তিনি হাসিতে হাসিতে বলিলেন, এমন নির্বোধ মেয়ে কোথা ছিল কিছুই বুঝে না । শুন বুঝাইয়া দিই, তোমার পিতা তোমার মাতাকে বিবাহ করিয়া আনিয়াছিলেন, সেইজন্ত তুমি তাহার কন্যা । শুনিয়া আমার অধিক চিন্ত হইতে লাগিল । আমি ভাবিয়া ভাবিয়া পুনর্বার বললাম, তিনি তবে কোথা গিয়াছেন? পিসী বলিলেন, মা ! ও কথা বলিখা আর জ্বালাইও না, তিনি মরিয়াছেন । ঐ মরা নাম শুনিয়া আমার অতিশয় ভয় হইল। আমি মনে মনে বলিতে লাগিলাম, মা বলিয়াছেন, ভয় হইলে দয়ামাধবকে ডাকিও ৷ আমার কাছে যদি মরা আইসে, তবে আমি দয়ামাধবকেই ডাকিব । এই ভাবিয মনকে কতক স্থির করিলাম । ইতিমধ্যে আমাদের বাটার কাছে এক বাটীতে এক দিবস রাত্রে আগুন লাগিয়াছে, তখন আমরা তিনজন ছোট । আমার দুই বৎসরের বড় এক ভাই, আর আমার দুই বৎসরের ছোট এক ভাই, ইহার মধ্যে আমি । আমাদের বাটীর নিকট একটা মাঠ আছে । সেস্থানে লোকের বসতি নাই এবং বৃক্ষাদি কিছুই নাই ; কেবল ক্রোশখানেক অস্তরে একটা নদী আছে। তথন আগুন দেখিয়া আমাদের পাটীর নিকটস্থ ঐ মাঠে সকলে জিনিস-পত্র সকল বাহির করিতেছে । সেইস্থানে আমাদের তিনজনকেও রাখা হইয়াছে । সে বাটতে আগুন ধকধকৃ করিয়া জ্বলিতেছে । তথাকার সকল লোক চীৎকার শব্দ করিতেছে । কত লোক কান্না আরম্ভ করিয়াছে। ঘরের বঁাশ কয়া চটপট করিয়া শব্দ করিতেছে, নানা প্রকার গোল হইতেছে । আমরা তিনজনে কাদিতেছি । ঐ আগুন যখন আমাদের বাটতে লাগিয়া এককালে প্রজ্বলিত হইয়া উঠিল, তখন আমাদের জ্ঞান হইল, যেন আগুনে পুড়িয়া মরিলাম। এই ভাবিয়া তিনজনে কাদিতে কাদিতে ঐ মাঠের দিকে চলিলাম। তখন আমরা এক একবার পিছনের