পাতা:আমার জীবন.djvu/৬৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

আমার জীবন 8ఫె ননদে যে ভাইজকে এত স্নেহ করে এ প্রকার কুত্রাপি দৃষ্ট হয় না । আমার চারি পাঁচটি সন্তান হইয়াছে, তথাপি এ পর্যন্ত আমি সেই ননদদিগের সঙ্গে মুখ তুলিয়া কথা কহিতাম না । ঐ সংসারের গৃহিণীর সমুদয় কাজ আমার করিতে হইত, কিন্তু আমি তাহাদিগকে জিজ্ঞাসা না করিয়া কোন কর্ম করিতাম না । তাহারা সকল বিষয়ে বেশ উত্তম লোক ছিলেন । আমি বার বৎসরের সময় পিত্রালয় ত্যাগ করিয়৷ এই শ্বশুরবাটতে আসিয়াছি । আর আমার বয়ঃক্রম যখন পচিশ বৎসর, তখন আমার মনের ভাব অনেক পরিবর্তিত হইয়াছিল বটে, কিন্তু তখন পর্যন্ত ছেলেমি ভাবটি কিছু কিছু ছিল । কিন্তু তখন তাহা বড় একটা প্রকাশ পাইত না । আমি যখন আট নয় বৎসরের ছিলাম, তখন আমাকে কত লোক পরিহাস করিয়া বলিত, তোমার মায়ের বিবাহ হয় নাই । আমার বুদ্ধি এমনি ছিল, আমি সেই কথায় বিশ্বাস করিতাম। পরে যখন আমার ২৫ বৎসর বয়ঃক্রম, তখনও সেই বুদ্ধির শিকড় কিছু কিছু ছিল, কিন্তু লোকে বড় প্রকাশ পাইত না, গুপ্তভাবে থাকিত । ঐ বাটতে একটা ঘোড়া ছিল, তাহার নাম জয়হরি। এক দিবস আমার বড় ছেলেটিকে সেই ঘোড়ার উপর চড়াইয়া বাটীর মধ্যে আমাকে দেখাইতে আনিল । তথন সকল লোক বলিল, এ ঘোড়াটি কর্তার। তখন আমাকে সকলে বলিতে লাগিল, দেখ দেখ ! ছেলে কেমন ঘোড়ায় চড়িয়া আসিয়াছে, একবার দেখ! আমি ঘরে থাকিয়া শুনিলাম, ওটা কর্তার ঘোড়া, সুতরাং মনে মনে ভাবিতে লাগিলাম যে, কর্তার ঘোড়ার সম্মুখে আমি কেমন করিয়া যাই, ঘোড়া যদি আমাকে দেখে, তবে বড় লজ্জার কথা । আমি মনে মনে এই প্রকার ভাবিয়া ঘরের মধ্যে লুকাইয়া থাকিলাম । তখন সকলে বার বার বলিতে লাগিল, বাহিরে আসিয়া দেখ, ভয় কি ? আমি ঘরের মধ্যে থাকিয়াই ভয়ে ভয়ে একটুক দেখিলাম । ঐ বাটীর আঙ্গিনাতে রাশি রাশি ধান ঢালা থাকে। ঐ জয়হরি ঘোড়া প্রত্যহ আসিয়া ঐ ধান খাইত ; পাছে ঐ ঘোড়া আমাকে দেখে, জীবন-৪