পাতা:আমার জীবন.djvu/৬৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

& e আমার জীবন এই ভয়ে আমি যদি বাহিরে থাকিতাম, তবে তাহাকে দেখিবামাত্র ঘরের মধ্যে গিয়া লুকাইতাম । এই প্রকারে কত দিবস যায়, এক দিবস আমি পাকের ঘরে ছেলেদিগকে থাইতে দিয়া অন্য ঘরে আসিয়াছি, ইতিমধ্যে ঐ জয়হরি ঘোড়া আসিয়া ধান খাইতে আরম্ভ করিল। তখন আমি ভারি মুস্কিলে পড়িলাম। ছেলেদিগকে থাইতে দিয়াছি, তাহারাও মা মা ডাকিতে লাগিল, কেহ বা কঁদিতে লাগিল । ঘোড়াও ধান থাইতে লাগিল, যায় না । আমি ভারি বিপদে পড়িয়া আগুয়ান পাছুয়ান করিতে লাগিলাম । কি করি কর্তার ঘোড়া, পাছে আমাকে দেখে, এই ভাবিয়া ঐখানেই থাকিলাম । ইতিমধ্যে আমার বড় ছেলেটি আসিয়া বলিল, ম, ও ঘোড়া কিছু বলিবে না, ও আমাদের জয়হরি ঘোড়া, ভয় নাই । তখন আমি মনে মনে হাসিতে লাগিলাম, ছি ;ছ আমি কি মানুষ ! আমি তো ঘোড়া দেখিয়৷ ভয় করি না, আমি যে লজ্জা করিয়৷ পলাইয়া থাকি । এতো মানুষ নহে, এ যে ঘোড়, ও আমাকে দেখিলে ক্ষতি কি ! এই সকল কথা যদি অন্য কেহ শুনিতে পায়, তবে আমাকে পাগল বলিয়া উপহাস করিবে । বাস্তবিক আমি যে ঘোড়া দেখিয়া লজ্জ করিয়া পলাইতাম, তাহ কেহ বুঝিত না । সকলে জানিত, আমি ঘোড়া দেখিয়া ভয়ে পলাইতাম । এ কথা আমি লজ্জায় আর কাহারও নিকট প্রকাশ করিলাম না। কিন্তু সেই দিবস হইতে আমি আর ঘোড়া দেখিয়৷ পলাইতাম না । সে কথ! সকলে জানিলে বোধ হয় আমাকে কত বিক্রপ করিয়া হাসিত । বাস্তবিক আমার অতিশয় ভয় ছিল । এখনকার ছেলেপিলেরা এত ভয় করা দূরে থাকুক, তাহাদিগকে বুড় মানুষে ভয় করিয়া থাকে। সে যাহা হউক, আমার নিজের বুদ্ধির দশা দেখিয়া মনে ধিক্কার জন্মে । আমার কর্ম দেখিয়া অন্ত লোকে তো হাসিতেই পারে, আপন কথা মনে হইলে আপনারি হাসি আইসে । তখন পর্যন্তও আমি পূর্বের মত বুক পর্যন্ত ঘোমটা দিয়া কাজ করিতাম ; কিন্তু ভাবিয়া দেখিলাম, এখনও নূতন বউ হইয়া থাকিলে কোনমতে সংসারের কাজ চলিবে না। কাজের অনেক রকম ক্ষত্তি